You dont have javascript enabled! Please enable it!

সাইলো গোডাউন বধ্যভূমি (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

সাইলো গোডাউন বধ্যভূমি (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে বহু লোককে হত্যা করা হয়। আশুগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনী নির্যাতন ও গণহত্যার তাণ্ডব চালায়। আশুগঞ্জ সাইলোর কাছে পাকবাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। এটি ছিল তাদের পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতর। এতদঞ্চলে এটিই ছিল পাকহানাদার বাহিনীর সবচেয়ে বড় টর্চার ক্যাম্প। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষকে সাইলোতে ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। পাকসেনা কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনের জন্য আশুগঞ্জ, ভৈরব ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের ধরে এ সাইলোতে আনা হতো। হানাদারদের ভোগের পর এরা শেয়াল-কুকুরের কিংবা মেঘনা নদীর মাছের খাবারে পরিণত হতো। সাইলোতে ৮০- ৯০ জন নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতিত নারীদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেন- আফরোজা, দেলোয়ারা, নজিরন, কাওসারি, আসমা, আয়েশা, রাবিয়া, মাহবুবা, রহিমা, রাজিয়া, অমর্ত বিবি, খাতুন, বীণা, ফিরোজা, নূরজাহান, লক্ষ্মী, ফাতেমা, রওশন, ফুলচান্দ বানু, লিলি, হেনা, গুলজার, আমিরুতুন্নেছা, পারুল, শাহিদা, মনোয়ারা, বিজয়া, কুলসুম, কেয়া, মুনিয়া, সাবিরা, হাফসা, লীনা, মাহফুজা, ফরহাদ বিবি, খুরশিদা, নাসিমা, হামিদা, মালা, মিনু, জায়েদা, মিলন, রত্না, হাফিজা, রোকিয়া, মিনা, ফরিদা, ফজিলাতুননেসা, মরিয়ম ও হরমতুননেসা। রাজাকাররা এলাকার বিত্তশালী লোকদের সাইলোতে আটক করে নির্যাতন চালিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করত। সাইলোর পশ্চিম পাশে শতশত লোককে হত্যা করে লাশ গণকবর কিংবা মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হতো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সাইলো থেকে ক্ষতবিক্ষত অনেক নারীকে উদ্ধার করা হয়। সাইলোর পশ্চিমে তখনো অসংখ্য লাশ ও নরকঙ্কাল পাওয়া যায়। সে বীভৎসতার কথা মনে হলে এখনো এলাকাবাসী শিউরে ওঠে। [আমির হোসেন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!