You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের কূটনীতিক সমর সেন - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের কূটনীতিক সমর সেন

সমর সেন (১৯১৪-২০০৩) ভারতের কূটনীতিক। তিনি ১৯১৪ সালের ১০ই আগস্ট অবিভক্ত ভারতের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডনের লিংকন্স ইনে অধ্যয়ন করেন। ১৯৩৮ সালে তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। তিনি জাতিসংঘের লিয়াজোঁ অফিসার (১৯৪৬-৪৮), পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, লন্ডনে হাইকমিশনের চ্যানসারি প্রধান (১৯৪৯), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপসচিব (১৯৫১-৫৩), ইনস্টিটিউট অর্গানাইজেশন অব জেনেভার কনসাল জেনারেল ও প্রতিনিধি (১৯৫৩-৫৫) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র বিষয়ক যুগ্মসচিব (১৯৫৭-৫৯) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে হাইকমিশনার (১৯৫৯-৬২), আলজেরিয়া, লেবানন, জর্ডান ও কুয়েতে রাষ্ট্রদূত (১৯৬২-৬৪), সাইপ্রাস (১৯৬৪-৬৬) ও পাকিস্তানে (১৯৬৬-৬৯) হাইকমিশনার, জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি (১৯৬৯-৭৪) এবং বাংলাদেশে হাইকমিশনার হিসেবে (১৯৭৪-৭৬) দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৭৫ সালের ২৬শে নভেম্বর ঢাকায় তাঁর ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয় এবং তিনি গুরুতর আহত হন। সুইডেনে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন শেষে (১৯৭৭-৭৮) তিনি অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ২০০৩ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সমর সেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন ও অন্যান্য সভায় জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহের প্রতিনিধিদের কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার তথ্য উপর্যুপরি তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর মুক্তির দাবিতে তিনি বিভিন্ন ফোরামে সোচ্চার ছিলেন। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গেলে তিনি অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাঁদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১লা অক্টোবর ২০১৩ সমর সেন-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড