বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাংবাদিক ও লেখক সন্তোষ কুমার ঘোষ
সন্তোষ কুমার ঘোষ (১৯২০-১৯৮৫) ভারতের সাংবাদিক ও লেখক। তিনি ১৯২০ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর পূর্ব বাংলার ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সুরেশ চন্দ্র ঘোষ এবং মাতার নাম সরুজাবালা দেবী। তিনি ১৯৩৬ সালে ম্যাট্রিকুলেশন, বঙ্গবাসী কলেজ থেকে ১৯৩৮ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৪০ সালে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। দৈনিক প্রত্যহ পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। অতঃপর তিনি যুগান্তর, দি স্টেটস্ম্যান এবং ১৯৫১ সালে দিল্লিতে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় যোগ দেন। তিনি ১৯৫৮ সালে আনন্দবাজার পত্রিকা-র বার্তা সম্পাদক হিসেবে কলকাতায় ফিরে আসেন। তিনি ১৯৬৪ সালে হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড ও আনন্দবাজার পত্রিকা-র সহযোগী সম্পাদক এবং ১৯৭৬ সালে আনন্দবাজার পত্রিকা-র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলা সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় তাঁর অবদানের জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কারসহ বহু সম্মামনা লাভ করেন। মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে জীবনের শেষ দিনগুলোতে ক্যান্সারের চিকিৎসা গ্রহণের সময় তিনি চিঠি ও ডায়েরি লিখতেন এবং এখানেই তিনি তাঁর শেষ ছোটোগল্প চলার পথে রচনা করেন, যেটি মরণোত্তর প্রকাশিত হয় (১৯৯৬)। ১৯৮৫ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি তিনি প্রয়াত হন।
মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের শিল্পী-সাহিত্যিকদের সহায়তার জন্য গঠিত ‘বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি’র তিনি সহ- সভাপতি ছিলেন। সে-সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে তিনি সচেষ্ট হন। তাছাড়া নিজ পত্রিকায় বাংলাদেশের লেখক- বুদ্ধিজীবীদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক লেখা প্রকাশের সুযোগ করে দেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সন্তোষ কুমার ঘোষ-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড