শোলক ভট্টাচার্য বাড়ি গণহত্যা (উজিরপুর, বরিশাল)
শোলক ভট্টাচার্য বাড়ি গণহত্যা (উজিরপুর, বরিশাল) সংঘটিত হয় ১৬ই জুন। এতে ৭ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। উজিরপুর উপজেলা সদর থেকে ৫ কিমি উত্তরে শোলক গ্রামে ভট্টাচার্য (ভটচাজ) বাড়ি অবস্থিত। ‘ভট্টাচার্য’ এ বাড়ির প্রাপ্ত উপাধি, এ বাড়ির লোকেদের প্রকৃত উপাধি ‘চ্যাটার্জী’ বা ‘চট্টোপাধ্যায়’। এ বাড়ির সন্তান বরিশালের প্রখ্যাত আইনজীবী এডভোকেট উপেন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী (বরিশাল ল কলেজের অধ্যক্ষ) ২৫শে মার্চ পাকবাহিনীর গণহত্যার পর গ্রামের বাড়িতে এসে আশ্রয় নেন। ঘটনার দিন স্থানীয় রাজাকারদের দেখানো পথে হানাদারদের শতাধিক সদস্যের একটি দল ধামুরা থেকে পায়ে হেঁটে শোলক গ্রামে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। তারপর বাড়ির প্রধান ব্যক্তি এডভোকেট উপেন্দ্রনাথ চ্যাটার্জীর সেজ ছেলে সুবাস চ্যাটার্জী হানাদারদের ভয়ে গচ্ছিত টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে বাড়ির বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করলে হানাদাররা তাকে ধরে ফেলে। হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় বাড়ির লাইসেন্স করা বন্দুক, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার এবং মূল্যবান সামগ্রী লুণ্ঠন করে পেট্রোল দিয়ে সমস্ত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা সুবাস চ্যাটার্জীসহ বাড়ির সকল পুরুষ সদস্যকে বাড়ির প্রধান গেটের সামনে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় সুবাস চ্যাটার্জীসহ ৭ জন শহীদ হন। তাদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- সুবাস চ্যাটার্জী (২০) (পিতা এডভোকেট উপন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী), যোগেশ ভট্টাচার্য (৬০) (পিতা প্রকাশ ভট্টাচাৰ্য,), সন্তোষ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাচরণ মিস্ত্রী ও চন্দ্র কান্ত দাস। শহীদদের লাশগুলো পরের দিন দিঘিরপাড়ে সমাহিত করা হয়। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড