বীর প্রতীক শেখ দিদার আলী
শেখ দিদার আলী, বীর প্রতীক (১৯৫২-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার আড়ুয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম নুরুল ইসলাম ও মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। সংসারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি কুষ্টিয়া টেলিফোন অফিসে চাকরি করতেন।
৭১-এর ১৫ই এপ্রিল শেখ দিদার আলী মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতের চাকুলিয়ায় প্রশিক্ষণ শেষে ৮নং সেক্টরে যোগদান করেন। তিনি গেরিলা পদ্ধতির যুদ্ধ সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করেন। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বহু গেরিলা যুদ্ধে তিনি সফলতার পরিচয় দেন। সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখ কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় বংশীতলার নিকটবর্তী দুর্বাচারা গ্রামে দিদার আলীর নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোপন ঘাঁটি থেকে সন্তর্পণে এগিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। আকস্মিক আক্রমণে পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকাররা দিশেহারা হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বীর বিক্রমে শত্রুর মোকাবেলা করতে থাকেন। হঠাৎ পাকিস্তানি সেনাদের ছোড়া একটি গুলি শেখ দিদার আলীর বুকে বিদ্ধ হলে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদান রাখা ও জীবন উৎসর্গ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক শেখ দিদার আলীকে ‘বীর প্রতীক’ (মরণোত্তর) খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [মো. ওসমান গনী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড