শিমূলআঁটি গণহত্যা (তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ)
শিমূলআঁটি গণহত্যা (তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় সেপ্টেম্বর মাসে। এতে ১৩ জন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ হন।
সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা হাসেন আলী ও সহিলাটি গ্রামের কুখ্যাত দালাল হেকিম মুন্সির নেতৃত্বে স্থানীয় রাজাকাররা পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে নিয়ে তাড়াইলের শিমুলআঁটি গ্রামে আক্রমণ করে। গভীর রাতে তারা গ্রামের পূর্ব-পশ্চিম দুদিক থেকে দুটি নৌকাযোগে প্রবেশ করে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা চালায়। গুলি ও গ্রেনেডের শব্দে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে প্রাণ বাঁচাতে উত্তর দিকে যার-যার বাড়ির পেছনে পানিতে নেমে লুকানোর চেষ্টা করে। কেউ-কেউ এলোমেলোভাবে ছোটাছুটি করতে থাকে। হানাদাররা তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক মানুষজন ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং শিমূলআঁটি গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক নিরু ডাক্তারের বাড়িতে জড়ো করে। এখানে মোট ১৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে। যারা শিমূলআঁটি গণহত্যার শিকার হন, তারা হলেন- অক্রোর চন্দ্র পাল (পিতা বোধরাম পাল), বসন্ত কুমার পাল (পিতা সুবল চন্দ্ৰ পাল), সুরেশ চন্দ্র পাল, উপেন্দ্র চন্দ্র পাল (পিতা নীলকণ্ঠ পাল), ধরণী চন্দ্র পাল (পিতা কটু পাল), মো. সুরুজ আলী (পিতা মকরম মিয়া), দীনেশ চন্দ্ৰ পাল কৃষ্ণা (পিতা হরিচরণ পাল), যতীন্দ্র পাল (পিতা হরিচরণ পাল), রাখাল চন্দ্র পাল (পিতা হরিচরণ পাল), শরৎ চন্দ্র পাল (পিতা গঙ্গাচরণ পাল), যোগেশ চন্দ্র কটুপাল (পিতা শম্ভুনাথ পাল), হরিমোহন পাল (পিতা রাজ পাল) ও শচীন্দ্ৰ চন্দ্ৰ পাল। [ছাদেকুর রহমান রতন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড