বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের চিকিৎসক শিশির কুমার বসু
শিশির কুমার বসু (১৯২০-২০০০) ভারতের চিকিৎসক। তিনি ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শরৎ চন্দ্র বসু ও মাতার নাম বিভাবতী বসু। তিনি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ভ্রাতুষ্পুত্র। তিনি ভারত ছাড় আন্দোলনে (১৯৪২) অংশগ্রহণ করে আহত ও কারারুদ্ধ হন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর বিপ্লবী সংগঠনের তিনি সমন্বয়কারী ছিলেন। ১৯৪৫ সালে কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর তিনি চিকিৎসাশাস্ত্রে শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে শিশু চিকিৎসায় রকফেলার ফেলোশিপ অর্জন করেন। ভারতে ফিরে তিনি ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের পরিচালক নিযুক্ত হন। তিনি ইন্ডিয়ান পেডিয়াট্রিকস-এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ইতিহাস, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান ‘নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি The Essential Writings of Netaji Subhas Chandra Bose গ্রন্থে নেতাজির জীবনী, স্মৃতিকথা এবং প্রতিবেদন লিখেছেন ও এটি সম্পাদনা করেছেন। ২০০০ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের চিকিৎসার জন্য ডা. শিশির বসু বনগাঁও সীমান্ত এলাকায় একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করেন। একজন শিশুরোগ চিকিৎসক হিসেবে এ হাসপাতালে তিনি শিশুদের জন্যও চিকিৎসার বিশেষ বন্দোবস্ত করেন। তিনি, তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা বসু ও পুত্র সুগত বসু এবং তাঁর সহকর্মীরা আহত মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর জনহিতকর সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা হ (মরণোত্তর) প্রদান করে। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড