শাহমীরপুর ফিরিঙ্গি বাড়ি গণহত্যা (পটিয়া, চট্টগ্রাম)
শাহমীরপুর ফিরিঙ্গি বাড়ি গণহত্যা (পটিয়া, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ৪ঠা জুন। বর্তমান কর্ণফুলী উপজেলার শাহমীরপুরস্থ ফিরিঙ্গি বাড়িতে দুপুর আনুমানিক দেড়টায় এ গণহত্যা সংঘটিত হয়। সেদিন পাকিস্তানি বাহিনী স্থানীয় দালালদের সঙ্গে নিয়ে চরলক্ষ্যা থেকে ৩ জন মুসলমানকে বন্দি করে শাহমীরপুরস্থ হিন্দু অধ্যুষিত জেলেপাড়ায় নিয়ে আসে। সেখানে জ্বালাও-পোড়াও ও নারীদের ওপর ধর্ষণ শেষে আরো ৯ জন হিন্দু জেলেকে বন্দি করে। অতঃপর বন্দি ১২ জনকে নিকটস্থ দেয়াঙ পাহাড়ের উত্তর পাশে অবস্থিত সন্দ্বীপ পাড়ার ফিরিঙ্গি বাড়ির পূর্ব পাশে নিয়ে গুলি করা হলে ১১ জন ঘটনাস্থলে শহীদ হন। রায়মোহন জলদাস (পিতা হরিকৃষ্ণ জলদাস) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে পালাতে সক্ষম হলেও পরদিন মারা যান। গণহত্যায় শহীদরা হলেন- দুধু মিয়া (পিতা মুন্সি মিয়া, জুলধা), আবুল হোসেন (পিতা মুন্সি মিয়া, জুলধা), আবদুল হাকিম (পিতা আফিউদ্দিন, জুলধা), রজনি জলদাস (পিতা রাজেন্দ্র জলদাস, জুলধা জেলেপাড়া), নিকুঞ্জ জলদাস (পিতা ধানন্দ জলদাস, জুলধা জেলেপাড়া), হরিপদ জলদাস (জুলধা জেলেপাড়া), লিনু জলদাস (পিতা প্রবীণচন্দ্র জলদাস, জুলধা জেলেপাড়া), নিতাই জলদাস (জুলধা জেলেপাড়া), মহেন্দ্ৰ জলদাস (জুলধা জেলেপাড়া), জীবনহরি জলদাস (পিতা প্রাণহরি জলদাস, জুলধা জেলেপাড়া), রায়মোহন জলদাস (পিতা হরিকৃষ্ণ জলদাস, জুলধা জেলেপাড়া), এবং রবীন্দ্র জলদাস (পিতা ব্রজেন্দ্র জলদাস, জুলধা জেলেপাড়া)।
সন্দ্বীপ পাড়ার দক্ষিণে দেয়াঙ পাহাড়ে খ্রিস্টানদের মরিয়ম আশ্রম অবস্থিত। এই আশ্রমের উত্তর পাশে পাহাড়ের ঢালুতে গীর্জাঘর নামে একটি কবরস্থান আছে। এই কবরস্থানের পূর্ব পাশে একটি গর্ত খুঁড়ে শহীদ ১১ জনের লাশ মাটিচাপা দেয়া হয়। পরদিন বাকি একজনের অর্থাৎ রায়মোহন জলদাসের লাশ জেলেপাড়ার শ্মশানে দাহ করা হয়। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড