বীর বিক্রম শাহ আলী আকন্দ
শাহ আলী আকন্দ, বীর বিক্রম (১৯৪০-২০০০) নায়েক ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৪০ সালের ১২ই জুন তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার কুড়ালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আশরাফ আলী আকন্দ এবং মাতার নাম কুলসুম বেওয়া।
শাহ আলী আকন্দ ইপিআর বাহিনীতে নায়েক পদে চাকরি করতেন। ৭১-এ তাঁর কর্মস্থল ছিল ইপিআর-এর খুলনা উইং। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ শুরু করার পর ২৬শে মার্চ বাঙালি ইপিআর, পুলিশ সেনা সদস্যদের নিরস্ত্র করার অপচেষ্টা চালায়। এমতাবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে তিনি ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং পরবর্তীতে মেজর এম এ মঞ্জুরের নেতৃত্বে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন সফিউল্লার কমান্ডে একাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। শাহ আলী আকন্দ বিভিন্ন যুদ্ধে গ্রুপ কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০শে সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার বালিয়াডাঙ্গায় পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের ওপর আক্রমণ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। এখানকার যুদ্ধে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন মাহবুব উদ্দিন আহমেদ আহত হন। বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ শাহ আলী আকন্দ আহত অবস্থায় পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়েন। সে অবস্থায় তিনি কৌশলে পাকসেনাদের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে ভারতে যান এবং সেখানে ব্যারাকপুর সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় এবং বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলী আকন্দকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। চাকরি জীবনে তিনি নায়েক সুবেদার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ২ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মোছা. জাহানারা বেগম। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড