You dont have javascript enabled! Please enable it!

শাহগ্রাম রেল ব্রিজ অপারেশন (পার্বতীপুর, দিনাজপুর)

শাহগ্রাম রেল ব্রিজ অপারেশন (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) পরিচালিত হয় সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। এতে ব্রিজটি ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে পাকবাহিনীর চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ৯ নম্বর হামিদপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম শাহগ্রাম। এ গ্রামের ভেতর দিয়ে পার্বতীপুর রেল জংশন থেকে ফুলবাড়ি-বিরামপুর হয়ে খুলনা ও রাজশাহীর দিকে রেলপথ চলে গেছে। বর্তমান বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির নিকটবর্তী এ গ্রামের ভেতর দিয়ে যাওয়া রেল লাইনে একটি ছোট ব্রিজ আছে। পাকিস্তানি সেনাদের অগ্রযাত্রা রোধ এবং গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ করার জন্য মুক্তিবাহিনী এ ব্রিজটি ধ্বংস করে দেয়৷
শাহগ্রামের দুদিকে পাকিস্তানি সেনাদের দুটি ক্যাম্প ছিল। একটি ঐ গ্রাম থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়িতে। সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের বড় ঘাঁটি ছিল। আরেকটি ৭ কিলোমিটার দূরে ভবানীপুর রেল স্টেশনে। এটি ছিল একটি ছোট ক্যাম্প।
ফুলবাড়ি ঘাঁটি থেকে পাকিস্তানি সেনারা বিহারিদের সঙ্গে নিয়ে প্রায়ই শাহগ্রাম ও তৎসংলগ্ন এলাকাগুলোয় এসে ত্রাস সৃষ্টি করত। লোকজনকে অত্যাচার-নির্যাতন ও তাদের মালামাল লুট করত। অনেক সময় নারীদেরও নির্যাতন করত। গ্রামের লোকজনের ঘর-বাড়িতে যখন-তখন আগুন লাগিয়ে দিত। তাই ফুলবাড়ির সঙ্গে পার্বতীপুরের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং শাহগ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোয় পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে মুক্তিবাহিনী আগস্ট মাসে শাহগ্রামের রেল সেতুটি ডিনামাইট বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়। হারেজউদ্দিন শেখ (৭৩) (পিতা দিদার বকস), বাগড়া-শিমনগর এলাকার মো. আলম, আব্দুস সালাম (পিতা লাইবুদ্দিন) প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা এ অপারেশনে অংশ নেন। অপারেশনের পর গ্রামের সব লোক পালিয়ে যায়। পাকসেনা ও বিহারিরা দিদার বকস, নজীরউদ্দিন সরকার, আজিজ সরকার, আনসার আলীর বাড়িসহ প্রায় শতাধিক বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!