বীর প্রতীক শাহজালাল আহমেদ
শাহজালাল আহমেদ, বীর প্রতীক (শহীদ ১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার হরিণঘাটা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম আলতাফ আলী ও মাতার নাম জমিলা খাতুন। তাঁর স্ত্রীর নাম সাফিয়া খাতুন।
শাহজালাল আহমেদ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে ল্যান্স নায়েক পদে চাকরি করতেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল কুমিল্লা সেনানিবাস। মার্চ মাসে পাকিস্তানি হানাদারদের হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হলে তিনি প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দেন। পরবর্তীতে ২নং সেক্টরের রাজনগর সাব-সেক্টরের গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের দলে যুদ্ধ করেন। শাহজালাল আহমেদ মুক্তিযুদ্ধে যেসব অপারেশনে অংশ নেন, সেগুলোর মধ্যে নোয়াখালীর সেনবাগ থানার দক্ষিণে ফেনী- লক্ষ্মীপুর সড়কের সংযোগস্থল কল্যাণদীতে অবস্থিত পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প আক্রমণ ছিল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ১৮ই সেপ্টেম্বর সংঘটিত এ অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধারা রাইফেল ও এনারগা গ্রেনেড দিয়ে ক্যাম্পটি আক্রমণ করলে সেখানে অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনা, মিলিশিয়ারাজাকার এবং আলবদররা পাল্টা গুলি ছোড়ে। বীরত্বপূর্ণ এ যুদ্ধে শাহজালাল আহমেদ এবং তাঁর সহযোদ্ধা আবু তাহের গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদত বরণ করেন। হানাদারদের গুলিতে আহত তাঁর অপর সহযোদ্ধা হাবিলদার মোহাম্মদ আলীও কিছু সময় পর মারা যান। তবে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে বহু পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এদেশীয় অনুচর হতাহত হয়। শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হয়ে পাকিস্তানি সেনারা রণে ভঙ্গ দিয়ে ভোররাতের দিকে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শহীদ শাহজালাল আহমেদ-কে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ পদকে ভূষিত করা হয়। [এস এম মাহফুজুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড