শালুকমুড়া গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর)
শালুকমুড়া গণহত্যা (কুমিল্লা আদর্শ সদর) মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ১৭ জন মানুষ শহীদ হন।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেলস্টেশন থেকে মাইল দেড়েক পূর্ব দিকে নিরিবিলি গ্রাম শালুকমুড়া। একদিন পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামটি ঘিরে ফেলে একে পর এক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সামনে যাকে পায় তাকেই গুলি করে হত্যা করে। তারা ছলিমুদ্দিনের বাড়িতে প্রবেশ করে সবগুলো ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। একটি ঘর আধপোড়া অবস্থায় ছিল। গৃহকর্ত্রী নুরু মিয়ার স্ত্রী তার আড়াই বছরের শিশু পুত্রকে সেখানে বসে দুধ পান করাচ্ছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনী নুরু মিয়ার স্ত্রীকে গুলি করে। গুলিতে মা এবং সন্তান দুজনই নিহত হয়। এ-সময় তাদের হত্যার শিকার হন ছলিমুদ্দিন, নুরু মিয়া, ময়না বেগম, জজের মা, খাতুনের ছেলে, খাতুনের বাবাসহ ১৭ জন। হানাদাররা বাড়ি ঘেরাও করার সময় ৩-৪ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তাদের মধ্যে ছিলেন সহোদর আবদুর রহিম ও খাতুন এবং একই বাড়ির জয়নাব। ঘাতক বাহিনী চলে যাওয়ার পর তারা বাড়িতে এসে দেখেন হানাদারদের সৃষ্ট নৃশংসতা। এর মধ্যে রহিম ও খাতুন মিলে বাবার লাশ দাফন করেন। পরবর্তীতে তারা পালিয়ে ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চলে যান। দেশ স্বাধীনের পর বাড়ি এসে লাশগুলোর কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেন। [মামুন সিদ্দিকী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড