You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক শামসুদ্দীন আহমেদ - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক শামসুদ্দীন আহমেদ

শামসুদ্দীন আহমেদ, বীর প্রতীক (১৯৩৯-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩৯ সালে কুষ্টিয়া জেলাধীন মিরপুর উপজেলার অন্তর্গত মহীষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম জরিমন নেছা এবং পিতার নাম হাউস সরকার।
শামসুদ্দীন আহমেদ ছিলেন কৃষক। বেশি পড়াশুনা করতে না পারলেও তিনি রাজনীতি সচেতন ছিলেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে অন্যদের মতো তিনিও সোচ্চার ছিলেন। দেশমাতৃকাকে শত্রুর কবল থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ১৫ই জুন তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতের চাকুলিয়া ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তিনি ৮নং সেক্টরের শিকারপুর সাব-সেক্টরের যুদ্ধে অংশ নেন। সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও গ্রুপ কমান্ডার আফতাব উদ্দীনের নেতৃত্বে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তিনি সফলতার পরিচয় দেন। সম্মুখ যুদ্ধ ছাড়া তিনি গেরিলা পদ্ধতির যুদ্ধ কৌশলও আয়ত্ত করেন। শামসুদ্দীন আহমেদ কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর, মিরপুর ও গাঙনী থানার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনীর বিরুদ্ধে বহু সম্মুখ যুদ্ধ ও গেরিলা হামলা সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করেন। কমান্ডার আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে শামসুদ্দীনসহ ছোট একটি দল পাকসেনাদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর উপজেলার শেরপুরে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে তাঁরা পিছু হটতে বাধ্য হন। একমাত্র শামসুদ্দীন আহমেদ ও তাঁর অপর এক সহযোদ্ধা ছাড়া অন্য সব মুক্তিযোদ্ধা নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হন। এ অবস্থায় শেরপুরের নিকটবর্তী সাতবাড়ীয়া নামক স্থানে শত্রুবাহিনীর হাতে তাঁরা ধরা পড়েন। আটকের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাত্র নয় দিন আগে (৭ই ডিসেম্বর) তাঁদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতা ও জীবন উৎসর্গের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দীন আহমেদকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘বীর প্রতীক’ (মরণোত্তর) খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ২ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম আনোয়ারা খাতুন আনাজান। [মো. ওসমান গনী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড