You dont have javascript enabled! Please enable it! শাকোয়া রাজাকার ক্যাম্প বধ্যভূমি (মোহনপুর, রাজশাহী) - সংগ্রামের নোটবুক

শাকোয়া রাজাকার ক্যাম্প বধ্যভূমি (মোহনপুর, রাজশাহী)

শাকোয়া রাজাকার ক্যাম্প বধ্যভূমি (মোহনপুর, রাজশাহী) রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার অন্তর্গত। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও শান্তি কমিটির সদস্যরা এখানে ৪২ জনকে হত্যা করে।
শাকোয়া এবং বাকশৈইল কামিল মাদ্রাসায় রাজাকারদের একটি বড় ক্যাম্প ছিল। ক্যাম্পের প্রধান ছিল আবুল মহসিন মোহাম্মদ মুয়াহিদ। সে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতা করত। তার সঙ্গে ছিল আনিছুর রহমান (মেলান্দী), কর্মত (মেলান্দী), জাফর ইকবাল মৃধা (মেলান্দী), কাশেম (আমগাছি), রহমত (সিংহমারা), শমসের (দেওপুর), জব্বার (বরিঠা), আব্দুস সামাদ (শাকোয়া) প্রমুখ। এখানকার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান খন্দকার রওশন আলীও এদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এরা বহু নিরীহ বাঙালিকে এখানে ধরে এনে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধা মো. ছোলাইমান আলী মৃধা, আইয়ুব আলী ও আমজাদ আলীকে এখানে ধরে এনে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে ছোলাইমান আলীকে হত্যা এবং আইয়ুব আলী ও আমজাদ আলীকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হল ক্যাম্পে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দেয়া হয়। শাকোয়া বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ মোট ৪২ জন নিরীহ বাঙালিকে অমানবিক নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশগুলো ক্যাম্পের উত্তর দিকে একটি বাংকারে পুঁতে রাখা হয়।
এ বধ্যভূমিতে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁরা হলেন- মো. মফিজ উদ্দিন (পিতা ইছর সরদার, সেন্দুরী), লোকমান শেখ (পিতা বাহার শেখ, সইপাড়া), নরেশ চন্দ্র সাহা (পিতা সুরেন চন্দ্র সাহা, ঐ), মো. বুনাউল্লা স্বর্ণকার (পিতা খুদি সরকার, ঐ), মো. ছোলাইমান আলী মৃধা (পিতা মিজো মৃধা, পাথালিয়া), মো. ফায়েজ উদ্দিন মৃধা (পিতা লালবর মৃধা, ঐ), মো. তমিজ উদ্দিন মীরমালত (পিতা সমতুল্লা মীরমালত, কৃষ্ণপুর), মো. নাদের আলী মণ্ডল (পিতা জুমন মন্ডল, খাঁড়ইল), গুরুপদ সরকার (পিতা সতীশ সরকার, বরইকুড়ি), আব্দুল মন্ডল (পিতা সাহেব মন্ডল, ইলামতপুর খাঁড়ইল), জালাল (পিতা ছোলাইমান, ইলামতপুর), জগন্নাথ প্রামাণিক (পিতা দ্বারকানাথ প্রামাণিক, বিদ্যাধরপুর), যাদব চন্দ্র সরকার (পিতা রায়ৎ ধর, বিদ্যাধরপুর), মো.আমজাদ (পিতা এনায়েত খাঁ, মৌপাড়া), মো. আয়উব আলী (পিতা সরাফত উল্লা, ঐ), বীরেন্দ্রনাথ ভৌমিক (পিতা রাধাকৃষ্ণ ভৌমিক, বাকশৈল), ভূপেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী (পিতা যোগেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী, হাটরা), রাজেন্দ্রনাথ (পিতা বামেন্দ্রনাথ, হাটরা), নঈম উদ্দিন (হাটরা), কায়েম (পিতা নুর মুহম্মদ, বগপাড়া), মো. খবির উদ্দিন (মহব্বতপুর), মো. আনছার আলী (পিতা ছামান, হরিহরপুর), খিদির (পিতা ইসরাইল, ঐ), হবির (পিতা বছির, বেলগাছী), ইয়ার আলী (পিতা নিয়ামত মোল্লা, পার মহব্বতপুর), সেকেন্দার (পিতা সিপাহি মীরমালত, কৃষ্ণপুর), নহির উদ্দিন মণ্ডল (পিতা জমির মন্ডল, বেড়াবাড়ি), লুৎফর রহমান (পিতা করিম মন্ডল, বেড়াবাড়ি), আনেছ সরদার (পিতা লোকমান সরদার, বেড়াবাড়ি), মসলেম (পিতা হোসেন, বেড়াবাড়ি), কছিমুদ্দিন (পিতা ফকির খাঁ, বেড়াবাড়ি), মহির উদ্দিন (পিতা মনির খাঁ, বেড়াবাড়ি), আব্দুল করিম শেখ (পিতা শাকির শেখ, একবারপুর), আব্দুল হামিদ (পিতা আনজের আলী, আতানারায়ণপুর), আব্দুল হামিদ (পিতা খাজা আহমেদ, ঘাসিগ্রাম), মজিবর রহমান (পিতা আব্দুল জলিল, হরিদাগাছী), ইউসুব শেখ (পিতা ইয়াকুব শেখ, ধুরইল), মো. সামসুল বিশ্বাস (পিতা আব্বাস বিশ্বাস, মোহনপুর), মো. আবদুর রাজ্জাক (পিতা আব্দুল করিম, মৌপাড়া), মোশারফ হোসেন (পিতা মুনপর রহমান, গোপালপুর), মো. ইমদাদুল হক (পিতা ইমাজ উদ্দিন, বেলনা) এবং রাখাল চন্দ্র দাস (পিতা রামদাস, বাক সিমইল)। [আখতারুজ্জাহান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড