You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে শরীয়তপুর সদর উপজেলা

শরীয়তপুর সদর উপজেলা ১৯৭১ সালে শরীয়তপুর পালং নামে মাদারীপুর মহকুমার একটি থানা ছিল। এ বছরের ১লা মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে পালংসহ মহকুমার পাঁচটি থানার সর্বত্র পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়। ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্র সমাজের পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ- ইত্যাদির পর এ অঞ্চলের মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, দেশ সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ৮ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের খবর রেডিওতে প্রচারিত হওয়ার পর দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো শরীয়তপুরেও “বীর বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘পিন্ডি না ঢাকা – ঢাকা ঢাকা’ ইত্যাদি স্লোগান ওঠে ৭ই মার্চের ভাষণে দেয়া বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অনুযায়ী শরীয়তপুরে ব্যাপক অসহযোগ আন্দোলন চলতে থাকে। ছাত্র-যুবকরা গোপনে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে।
২৬শে মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণা ওয়ারলেসের মাধ্যমে শরীয়তপুর থানায় এসে পৌঁছায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সালেক খান বার্তাটি পেয়ে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের হাতে পৌঁছে দেন। বার্তাটির বঙ্গানুবাদ করেন তুলাসার গুরুদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষক জালাল উদ্দিন আহমেদ। বঙ্গানুবাদের পর বার্তাটি প্রেসে ছেপে বিতরণ করা হয়। ২৭শে মার্চ বিকেলে শরীয়তপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এক জনসভা আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শরীয়তপুরের বিশিষ্ট নেতা মো. আলী আজম শিকদার, মো. মজিবুর রহমান চৌধুরী, আবুল ফজল মাস্টার, আব্দুর রব মুন্সী, সুলতান মাহমুদ সীমন প্রমুখ বক্তৃতা করেন। তাঁরা ‘ইয়াহিয়ার ঘোষণা
মানি না মানি না’ বলে স্লোগান দেন। এরপর পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের জন্য শরীয়তপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলের দোতলায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভা থেকে ৩১শে মার্চ প্রতিরোধ সভার আয়োজন করা ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের জন্য শরীয়তপুরে মো. মজিবুর রহমান চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো. আলী আজম শিকদার এবং সদস্য ছিলেন রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরী, সরদার এইচ এস সিরাজ, আবুল ফজল মাস্টার, জালাল আহমেদ মাস্টার, জাফর আহমেদ, এম এ ছাত্তার খান, আব্দুর রাজ্জাক খান, আব্দুল মজিদ মোড়ল, রমেশ চন্দ্র, আলী আহমেদ তালুকদার, আলী হোসেন খান প্রমুখ। শরীয়তপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নেও সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়।
২৫শে মার্চ গণহত্যার পর ঢাকা থেকে অসংখ্য মানুষ এ এলাকায় আসতে থাকে। তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। শরীয়তপুর কমিউনিটি সেন্টারে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়। ৩১শে মার্চ বিকেল তিনটায় তুলাসার গুরুদাস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রথীন্দ্রকান্ত ঘটক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শরীয়তপুর অঞ্চলে প্রথম বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজ পাতাকা উত্তোলন করা হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। সবচেয়ে বড় ক্যাম্প স্থাপন করা হয় তুলাসার গুরুদাস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। এছাড়া মনোহর বাজার খেলার মাঠ, রুদ্রকর নীলমণি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, আঙ্গারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ এবং সুবেদারকান্দি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠেও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এসব ক্যাম্পে বহু সংখ্যক যুবক বাঁশের লাঠি ও বন্দুক দিয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন আবদুল কাদের মিয়া, ফজলুর রহমান সরদার, অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক মো. কুতুব উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ। প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য অনেককে ভারতে পাঠানো হয়। বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা স্টুয়ার্ড মুজিবের তত্ত্বাবধানে ১০ই এপ্রিল ত্রিপুরা যান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইউনুস আলী খান মিতালী, ইউনুস খলিফা, জেমস বাবুল, ডা. কাঞ্চনসহ ১৬-১৭ জন। এঁরা এবং অন্য মুক্তিযোদ্ধারা ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে বিভিন্ন অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের খবর প্রচারের জন্য শরীয়তপুর থেকে আমির হোসেন কর্তৃক বাংলার মুখ- নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মাদারীপুর মহকুমা মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলেন কর্নেল শওকত আলী। বিভিন্ন থানায়ও কমান্ডার নিয়োগ দেয়া হয়। কর্নেল শওকত আলী শরীয়তপুর ও নড়িয়া অঞ্চলে ইউনুস আলী খান মিতালীকে এবং শরীয়তপুর থানায় ইদ্রিস আলী মাস্টারকে কমান্ডার ও আবুল কাসেম মৃধাকে ডেপুটি কমান্ডার নিযুক্ত করেন। এ অঞ্চলে মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন আবুল ফজল মাস্টার। শরীয়তপুর জেলা ২ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। এখানকার যুদ্ধ বিষয়ক নীতি নির্ধারিত হতো মেলাঘর থেকে।
২৬শে এপ্রিল পর্যন্ত সমগ্র মাদারীপুর মহকুমা (বর্তমান মাদারীপুর ও শরীয়তপুর) স্বাধীন ছিল। তখন প্রশাসন পরিচালনা করতেন মাদারীপুরের এসডিও সৈয়দ রেজাউল হায়াত। ২৭শে এপ্রিল পাকবাহিনী মাদারীপুর শহরে প্রবেশ করে। তারা মাদারীপুর মহকুমা সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আসমত আলী খান এমপিএ ও ফণীভূষণ মজুমদার এমপিএ-র বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এলোপাতাড়িভাবে গুলি বর্ষণ করে শহরকে প্রায় জনশূন্য করে ফেলে। পাকবাহিনী কর্তৃক মাদারীপুর দখলের পর শরীয়তপুরসহ অন্যান্য থানায় পুলিশের ভূমিকা পরিবর্তিত হতে থাকে। তারা পাকবাহিনীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। শরীয়তপুরে পাকবাহিনী স্থায়ী কোনো ক্যাম্প স্থাপন করেনি। তারা মাদারীপুর থেকে এসে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আবার মাদারীপুরে ফিরে যেত। তবে মাঝে-মধ্যে শরীয়তপুর ইউনিয়ন পরিষদ হলে অবস্থান করত। যুদ্ধের শেষদিকে রাজগঞ্জের কুদঘরে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প করেছিল। এছাড়া আলো-ছায়া সিনেমা হলে (পালং বাজার) রাজাকাররা ক্যাম্প স্থান করে।
শরীয়তপুর থানায় শান্তি কমিটি- ও রাজাকার বাহিনী সক্রিয় ছিল। শান্তি কমিটির আহ্বায়ক ও সেক্রেটারি ছিল যথাক্রমে ফজলুর রহমান কোতওয়াল ও জয়নাল আবেদীন তালুকদার। এ কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে মওলানা নুরুল ইসলাম, মওলানা সালামত উল্লাহ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাফর, মওলানা সোলেমান, জান শরীফ সরদার, হাসমত আলী খান, মতিউর রহমান বেপারী, জহির খান, আ. রব শিকদার, আ. জলিল শিকদার, আবুল কাসেম সরদার, আরব আলী বেপারী, আরশেদ আলী খান, নুর মোহাম্মদ, নুর মহাম্মদ খান, আ. আজিজ মোল্লা, আ. আজিজ হাওলাদার, আ. কাদের খান, আফতাব উদ্দিন দেওয়ান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। রাজাকার হিসেবে আঠারো জনের নাম পাওয়া যায়। তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালায়। পাকবাহিনী এ এলাকায় হত্যাযজ্ঞ চালানোর সময় কুখ্যাত মওলানা সোলেমান তাদের সহযোগিতা করে। যুদ্ধের শেষদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশন শুরু হলে শান্তি কমিটির কয়েকজন সদস্য নিহত হয়।
শরীয়তপুর ছিল একটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার কুড়াশি, দেওভোগ, কোয়ারপুর, ধানুকা, মধ্যপাড়া, মনোহরপুর, আঙ্গারিয়া প্রভৃতি এলাকা অনেক বিশিষ্ট হিন্দু ব্যক্তির জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত। ২৭শে এপ্রিল মাদারীপুরে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের পর পাকবাহিনী রাজৈর থানার হিন্দু অধ্যুষিত সোনাদিয়া গ্রামে নির্বিচারে গোলাবর্ষণ করে বহু মানুষকে হত্যা করে। ২২শে মে তারা স্থানীয় রাজাকার প্রধান সোলেমান, মাওলানা ইদ্রিস আলী সরদার, মো. মজিবর রহমান তালুকদার, রবুল্লা মাস্টার, আজিজ মোল্লা, ইউসুফ আলী মোল্লা, আ. রব সরদার প্রমুখের সহযোগিতায় আঙ্গারিয়া বাজার আক্রমণ করে। এদিন আঙ্গারিয়া, মধ্যপাড়া, কামারভোগ, নীলকান্দি, পশ্চিম কাশাভোগ, দক্ষিণ মধ্যপাড়া, উত্তর মধ্যপাড়া, মনোহর বাজার ও রুদ্রকর এলাকায় নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। এতে তিনশতাধিক হিন্দু নরনারী শহীদ হয়। এ ঘটনাটি এলাকায় শরীয়তপুর গণহত্যা নামে পরিচিত। একই সঙ্গে গ্রামগুলোতে লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগও করে।
পাকিস্তানি সৈন্যরা রুদ্রকর গ্রামের জমিদার প্রমথ বাবুর বাড়িতে নবাব আমলে প্রতিষ্ঠিত প্রায় ১৫০ ফুট উঁচু মঠে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও ব্রাশ ফায়ার করে। তারা মনোহর বাজারের সাথী বিড়ি কোম্পানির মালিক রমণী সাহাসহ তাঁর পরিবারের ৯ জনকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে, যা মনোহর বাজার গণহত্যা নামে পরিচিত। মনোহর বাজারে তারা ১০- ১২ জন হিন্দু মহিলাকে ধর্ষণ করে। এখান থেকে পাকবাহিনী প্রায় ১০০ জন হিন্দু নর-নারীকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের উত্তর মধ্যপাড়ার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি ও মন্দিরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের পর হত্যা করে। এ ঘটনা উত্তর মধ্যপাড়া গণহত্যা হিসেবে পরিচিত। পাকবাহিনী বিভিন্ন গ্রাম থেকে ২৫-৩০ জন হিন্দু নারীকে মাদারীপুর ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন শেষে হত্যা করে। তাদের মধ্যে একজন প্রসূতি নারীও ছিলেন। তার ১৩ দিনের শিশু সন্তানকে পাকিস্তানি সৈন্যরা লাথি মেরে ছুড়ে ফেললে শিশুটি সঙ্গে-সঙ্গে মারা যায়। পাকবাহিনী মধ্যপাড়া গ্রামের সখীবালা দাসকে ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে। রুদ্রকর গ্রামের জমিদার প্রমথ লাল চক্রবর্তীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে পূজারি ব্রাহ্মণ চন্দ্রমোহন চক্রবর্তীকে মঠের পুকুরে ফেলে গুলি করে হত্যা করে। উপজেলার মনোহর বাজার সংলগ্ন মধ্যপাড়ায় একটি গণকবর রয়েছে।
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো সম্মুখ যুদ্ধ হয়নি। তবে শরীয়তপুর থানা মুক্তকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় দালাল, রাজাকার ও পুলিশের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের ২০শে জুন ও ২১শে সেপ্টেম্বর দুটি যুদ্ধ হয়। শরীয়তপুর থানা যুদ্ধ-এ শত্রুপক্ষের ৫৫ জন নিহত হয় এবং আব্দুল মান্নান রাড়ি ও আবু তাহের খলিফা নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ ঘটনার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পরের দিন ২২শে সেপ্টেম্বর স্থানীয় দালালদের অনুরোধে পাকবাহিনী মাদারীপুর থেকে শরীয়তপুর আসে এবং সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। পাকবাহিনী ঐদিন মনোজ কুমার অধিকারীদের ৭টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এর কিছুদিন পর পাকবাহিনী রাজগঞ্জের কুদঘরে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। ক্যাম্পে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কয়েকজন পাকসেনা লঞ্চে অবস্থান করে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা রাজগঞ্জে নদীর উত্তর দিকে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের ক্যাম্পে আক্রমণ চালিয়ে ব্যর্থ হন। পরদিন সকালে পাকবাহিনী নদীর উত্তর তীরে কাজী বাড়ির দুজন যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে মাদারীপুর চলে যায়। ১০ই ডিসেম্বর শরীয়তপুর সদর উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আব্দুল মান্নান রাড়ি, আবু তাহের খলিফা, দলিল উদ্দিন সরকার, যতীশ চন্দ্র সাহা, এইচ এস সিরাজ উদ্দিন এবং ডা. কাঞ্চন। এছাড়া রাজৈর উপজেলার তিনজন মুক্তিযোদ্ধা এখানে যুদ্ধ করতে এসে শহীদ হন। তাঁরা হলেন— মানিক সরদার (পিতা নাসের উদ্দিন সরদার, স্বরমঙ্গল; ১০ই মে পালং থানায় চিঠিসহ ধরা পড়ে শহীদ), বিজয় মৃধা (পিতা বিনোদ বিহারী মৃধা, আমগ্রাম; ঐ) ও সাঈদুর রহমান মুন্সী (পিতা আবদুল হামিদ মুন্সী, স্বরমঙ্গল; ১২ই মে মাদারীপুরের হাওলাদার জুটমিল এলাকায় শহীদ)। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এবং পৌরসভার সামনে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। উত্তর মধ্যপাড়া গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে মনোহর বাজারে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া রুদ্রকর গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যায় শহীদদের একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। [আবদুর রব শিকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!