You dont have javascript enabled! Please enable it!

শমশেরনগর গণহত্যা (কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার)

শমশেরনগর গণহত্যা (কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার) সংঘটিত হয় ১৪ই এপ্রিল। এতে শতাধিক মানুষ শহীদ হন। ২৮শে মার্চ শমশেরনগর প্রতিরোধযুদ্ধ-এ মুক্তিবাহিনীর হাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বেলুচ রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন গোলাম রসুলসহ ১১ জন সদস্য নিহত হলে পাকসেনারা প্রতিশোধ নিতে ১৪ই এপ্রিল রাজাকারদের সহায়তায় শমশেরনগরে হানা দেয়। তারা বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এরপর শমমেরনগর বিমান বন্দরের রানওয়ের উত্তর-পশ্চিম কোণে দাঁড় করিয়ে গুলি করে তাদের হত্যা করে। শমশেরনগর ইউনিয়নের সোনাপুর, গোষপুর, কৃষ্ণপুর, কেছুলুটি ও পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য গ্রামের নিরীহ হিন্দু-মুসলমানরা এ হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। মুসলিম লীগ নেতা আরিফ মুন্সীর নেতৃত্বে ও নির্দেশে রাজাকার কামিল চৌকিদার, খলিলুর রহমান (গ্রাম শ্রীসূর্য)-সহ অন্য রাজাকাররা পাকিস্তানি হানাদারদের সহায়তা করে।
এদিন রাতে কামিল চৌকিদার ও ইদ্রিছ-সহ কয়েকজন রাজাকারের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা সোনাপুর গ্রামের প্রতাপ পাল ও তার বড়ভাই পীযূষ পাল, ঘোষপুর গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা মোবাশ্বির আলী, শঙ্করপুর গ্রামের আব্দুল বারী, কৃষ্ণপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুরের পিতা আব্দুল গনি, তার দুই ভাই আব্দুস শুকুর, আব্দুন নুর, শ্রীসূর্য গ্রামের রমেশ চন্দ্র দাস, যোগেশ চন্দ্র দাস, কৃপেশ রঞ্জন দত্ত, পতনউষারের আপ্তাব খান, আখতার খান, কেছুলুটি গ্রামের রোস্তম আলী, রামপুরের খোকা মল্লিক ও পাখি মল্লিক-সহ চৈত্রঘাট, মুন্সীবাজার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষকে ধরে শমশেরনগর ডাকবাংলোয় আনে। পাকসেনারা ক্যাম্প সংলগ্ন নির্যাতন কক্ষে রেখে হাত-পা ও চোখ বেঁধে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এমনকি কয়েকজনকে বটগাছে ঝুলিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে। এরপর সবাইকে শমশেরনগর বিমান বন্দরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় উপর্যুক্ত ১৫ জনসহ শতাধিক লোক নিহত হয়। এ গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে শমশেরনগরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। [মুজিবুর রহমান রঞ্জু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!