You dont have javascript enabled! Please enable it!

শমশেরনগর-ভানুগাছ অপারেশন (কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার)

শমশেরনগর-ভানুগাছ অপারেশন (কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার) সংঘটিত হয় ১লা ডিসেম্বর থেকে ৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে পাক মেজর দাউদসহ অনেক পাকসেনা নিহত হয়। অপরপক্ষে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৪ জন সদস্য শহীদ হন। যুদ্ধে পাকবাহিনী পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়।
আলীনগর ইউনিয়নের চিৎলিয়া, জাঙ্গালিয়া ও কামুদপুর হয়ে ভানুগাছ পর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্র বিস্তৃত ছিল। এ-যুদ্ধে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি ইউনিটের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, আব্দুল হামিদসহ অনেকে অংশ নেন। যুদ্ধের শেষের দিকে এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ময়না মিয়া পথপ্ৰদৰ্শক হয়ে জেড ফোর্সের প্রধান মেজর জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম-কে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে আসেন। ভানুগাছ বাজার ও ধলাই নদীর পূর্ব পাড়ে পুরাতন লোহার সেতু এলাকায় পাকবাহিনী ও রাজাকার বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত মেজর দাউদের নেতৃত্বাধীন শত্রুসেনাদের সঙ্গে এ যুদ্ধ হয়।
ভানুগাছ বাজারে মেজর দাউদের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর একটি শক্তিশালী অবস্থান ছিল। ধলাই পুরাতন লোহার সেতুর পশ্চিম অংশেও তাদের ঘাঁটি ছিল। মনিরা সিনেমা হল ও ভানুগাছ বাজারের চালহাটায় পাকবাহিনীর দুটি মর্টার পোস্ট ছিল। ১লা ডিসেম্বর থেকে টানা ৪ঠা ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের ভারী অস্ত্রের গুলি বিনিময় হয়। পাকবাহিনী মর্টারের গুলিও নিক্ষেপ করে। পাকসেনাদের অবস্থান ধ্বংস করতে এক সময় ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যরা সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতায় এ-যুদ্ধে মেজর দাউদ-সহ অনেক পাকসেনা নিহত হয়। ৫ই ডিসেম্বর ভোরে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৪ জন সদস্য শহীদ হন। তাঁদের আলীনগর ইউনিয়নের পশ্চিম কামুদপুর গ্রামে কবর দেয়া হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাকসেনারা ভানুগাছ বাজারের অবস্থান ত্যাগ করে মৌলভীবাজার সদর হয়ে সিলেটের দিকে চলে যায়। [মুজিবুর রহমান রঞ্জু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!