শংকরপুর বধ্যভূমি (যশোর সদর)
শংকরপুর বধ্যভূমি (যশোর সদর) যশোর সদর উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়।
শংকরপুর যশোর সদর উপজেলার দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে ছিল হাঁস-মুরগির একটি খামার। খামার এলাকাটি ছিল নির্জন। তাই স্থানীয় বিহারিরা বাঙালিদের এখানে ধরে এনে জবাই করত। খামারের ৪ ও ৫ নং শেডে যেখানে মুরগি রাখা হতো, সেখানেই মানুষ হত্যা করে পুঁতে রাখা হতো। যেসব বিহারি এখানে হত্যাকাণ্ড চালায়, তারা হলো হাবিব, টনিয়া, কালুয়া, রমজান, মোস্তফা প্রমুখ। এরা রেলস্টেশন, বনগাঁ সীমান্ত ও বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে তাদের ওপর নির্মম অত্যাচার করত এবং পরে হত্যা করত।
১৬ই ডিসেম্বর দেশ শত্রুমুক্ত হলে দেশী-বিদেশী কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শংকরপুর বধ্যভূমি দেখতে আসেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ভারতের বিখ্যাত রাজনীতিক ইলা মিত্র এবং সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী। তাঁরা শংকরপুর বধ্যভূমি দেখে বেদনাভারাক্রান্ত হন। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই বধ্যভূমি থেকে কয়েক ট্রাক হাড়গোড় ও কঙ্ককাল নিয়ে যায়। ১৯৯২ সালে যশোরের সাংস্কৃতিক কর্মীরা শংকরপুর বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন। প্রতিবছর ১৪ই ডিসেম্বর বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা এখানে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। [মহসিন হোসাইন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড