বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমাজসেবী লেডি রানু মুখার্জী
লেডি রানু মুখার্জী (১৯০৬-২০০০) ভারতের সমাজসেবী, ১৯০৬ সালে বানারসে জন্মগ্রহণ করেন। রানু মুখার্জী ওরফে রানু অধিকারী লেডি রানু নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি অ্যানি ব্যাসনস্ থিওসফিক্যাল স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। শৈশব থেকেই তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একজন অনুসারী ছিলেন এবং পরবর্তীকালে তিনি শিল্প ও সংস্কৃতির একজন সমঝদার হয়ে ওঠেন। তেরো বছর শান্তিনিকেতনে অবস্থান করে তিনি নন্দলাল বসুর কাছ থেকে অঙ্কন ও সুরেন করের কাছ থেকে চিত্রকলা বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। তাঁর অনুপ্রেরণা ও প্রচেষ্টায় ১৯৩৩ সালে কলকাতা একাডেমি অব ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সাল থেকে তিনি এর সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত হন। চিত্রকলার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি এ প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৬২ সালে এ একাডেমিতে রবীন্দ্র গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিল্পসামগ্রী, বিভিন্ন চিঠি, পাণ্ডুলিপি, চিত্রকর্ম ইত্যাদি সংরক্ষণ করা আছে। তিনি ২০০০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সভাপতি লেডি রানু মুখার্জী একাডেমির মিলনায়তনে নিয়মিতভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অর্থসংগ্রহ করতেন এবং শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য প্রেরণ করতেন। তিনি বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২৪শে মার্চ ২০১৩ তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড