লোহালিয়া গণহত্যা (পটুয়াখালী সদর)
লোহালিয়া গণহত্যা (পটুয়াখালী সদর) ২৩শে মে সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ৩১ জন মানুষ শহীদ হন।
পটুয়াখালী উপজেলা সদর থেকে ৪ কিমি উত্তরদিকে লোহালিয়া গ্রামের অবস্থান। ২৩শে মে হানাদার বাহিনী স্থানীয় রাজাকার ও পুলিশের সহায়তায় লোহালিয়া নদীর পূর্ব দিকে পালের ডাঙ্গা খালের পাড়ে পাজাখালী, বল্লভ, পালপাড়া ও কুড়িপাইকা গ্রামে আক্রমণ করে। রাজাকার কমান্ডার আ. আজিজ জোমাদ্দারের (৬৫) দেখানো পথে ২৫- ৩০ পাকিস্তানি সৈন্য প্রথমে সূর্যকান্ত বিশ্বাসের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ২০-২৫টি ঘরে আগুন দেয়। হানাদার বাহিনীর আক্রমণের খবর পেয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করে হানাদাররা পাজাখালী ও কুড়িপাইকা গ্রাম থেকে লোকজনকে শান্তি কমিটি গঠনের কথা বলে পাজাখালী গ্রামে একত্রিত করে। সেখান থেকে তাদের লোহালিয়া নদীর পূর্ব দিকে পালের ডাঙ্গা খালের পাড়ে নিয়ে এসে রশি দিয়ে বেঁধে লাইনে দাড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় ৩১ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। তাদের মধ্যে ২১ জনের নাম- পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- পাজাখালী গ্রামের সূর্যকান্ত বিশ্বাস (৭০) (পিতা চন্দ্ৰকান্ত বিশ্বাস), শ্রীনাথ চন্দ্ৰ পাল (৪০), নগেন (২৫) (পিতা নিবারণ), দোহারিকা তালুকদার (৬০), দীনবন্ধু ঘোসাই (৪০), মতিলাল ভদ্র (পিতা মনোহর বিশ্বাস), দ্বারিকানাথ দত্ত, কুড়িপাইকা গ্রামের সীতানাথ দাস (পিতা পেয়ারী দাস), লক্ষ্মীকান্ত দাস (পিতা কৃষ্ণ কান্ত দাস), সূর্যকান্ত দাস (পিতা রজনীকান্ত দাস), গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস (পিতা মনোহর চন্দ্র দাস), নিতাই চন্দ্ৰ দাস (পিতা মনোহর দন্দ্র দাস), লক্ষ্মীকান্ত দাস (পিতা দোয়ারিকান্ত দাস), রাজবিহারী দাস (পিতা প্রসন্নকুমার দাস), মথুরানাথ দাস (পিতা প্রসন্নকুমার দাস), দশরথ দাস (পিতা রামচন্দ্র দাস), অটল চন্দ্র দাস (পিতা দশরথ চন্দ্র দাস), কার্তিকচন্দ্র দাস (পিতা কৃপানাথ দাস), উপেন্দ্রনাথ দাস (পিতা বুটুলাল দাস), রাজেন্দ্রনাথ দাস (পিতা বুটুলাল দাস) ও সুখরঞ্জন দাস। গণহত্যার স্থানটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। [ইব্রাহীম খলিল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড