মুক্তিযুদ্ধে লালমোহন উপজেলা (ভোলা)
লালমোহন উপজেলা (ভোলা) রাজনীতি-সচেতন লালমোহনে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ডা. আজাহার উদ্দিন আহমেদ এবং মো. মোতাহার উদ্দিন (মোতাহার মাস্টার) যথাক্রমে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। উভয়েই ছিলেন আওয়ামী লীগ-এর প্রার্থী। কিন্তু নির্বাচনের গণরায় নস্যাৎ করতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। এর ফলে সারাদেশের মতো এ এলাকার মানুষও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে জনগণ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে এবং তাঁর সাতই মার্চের ভাষণ- থেকে তারা মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা লাভ করে।
২৫শে মার্চ রাত থেকে ঢাকায় পাকবাহিনীর পৈশাচিক নির্যাতন ও নির্বিচার গণহত্যা এবং বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার কথা মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ ও অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতার উদ্যোগে ২৬শে মার্চ গজারিয়া বাজারে অনুষ্ঠিত জনসভার মাধ্যমে সকলকে অবহিত করা হয়। সভায় জনগণের প্রতি প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানানো হয়। ২৭শে মার্চ ডা. আজহার উদ্দিন আহমেদ এমএনএ, মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখলেছুর রহমান ও সোলায়মান হাওলাদারের নেতৃত্বে লালমোহন থানা সদরে জঙ্গি মিছিল ও সভা হয়। ঐদিনই ডা. আজাহার উদ্দিন আহমেদ এমএনএ-কে উপদেষ্টা, মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ-কে সমন্বয়ক, মোখলেছুর রহমানকে সভাপতি, মোজাফ্ফর তালুকদারকে সদস্য-সচিব এবং আবু মিয়া সওদাগর, সেকান্দার কেরানী, সোলায়মান হাওলাদার, নিজামুল হক ভদ্র, আজিজুল ইসলাম মিয়া, মফিজুল ইসলাম কানু, মফিজুল ইসলাম মফি, আবিদুল ইসলাম কানু, ইয়াছিন মিয়া, বশির মাস্টার, আবদুর রব শিকদার প্রমুখকে সদস্য করে লালমোহন থানা সংগ্রাম কমিঠি গঠন করা হয়। সংগ্রাম কমিটির কর্মকাণ্ড আওয়ামী লীগের থানা কার্যালয় থেকে পরিচালিত হতো। কমিটি গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধ পরিচালনার জন্য সদস্যরা নিজেরা চাঁদা প্রদানসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের ব্যবসায়ী এবং স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নিকট থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। এ-সময় রিলিফের মালামাল বিক্রি করে সংগ্রাম কমিটির নিকট টাকা জমা দেয়া হতো। সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্যবৃন্দ একত্রিত হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উল্লেখযোগ্য সদস্য ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আহম্মদ, আবু সায়েদ, রাজ্জাক পঞ্চায়েত, আজিজুল ইসলাম, আলী রেজা, ইব্রাহিম খলিল মাস্টার, আবদুল মালেক, তোফাজ্জল হোসেন, ফখরুল আলম, মোতাহার হোসেন সওদাগর, মফিজুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পর মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে গজারিয়া হাইস্কুল মাঠে হাবিলদার মাহে আলম কুট্টি, কমান্ডার আবু মুসা এবং সোলায়মান হাওলাদারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মাহে আলম কুট্টির নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল গঠিত হয়। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ডা. আজাহার উদ্দিন আহমেদ এমএনএ, মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ, মোখলেছুর রহমান এবং সিদ্দিকুর রহমান কমান্ডারের পৃষ্ঠপোষকতায় লালমোহন গালর্স হাইস্কুলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রশিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন সেনাসদস্য মজিবর মাস্টার, নুরুজ্জামান, জয়নাল আবেদীন, আনসার কমান্ডার মজিবল হক, খালেক, জলিল মিয়া, ক্যাপ্টেন নাসির উদ্দিন, পুলিশ সদস্য আব্দুল জলিল, মোজাফ্ফর আহম্মদ প্রমুখ। ভোলায় পাকবাহিনী অনুপ্রবেশের পর স্থানীয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা তখন গোপনে অন্যত্র প্রশিক্ষণ নিতে চেষ্টা করেন। অনেকে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে গমন করেন। ২৭শে এপ্রিল ডা. আজহার উদ্দিন আহমেদ এমএনএ বরিশালে পাকবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করলে মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ গতিশীল নেতৃত্ব দিয়ে জনগণকে সংঘবদ্ধ রাখেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেন।
যুদ্ধকালীন সময়ে লালমোহনে কোনো থানা কমান্ডার ছিল না। সিদ্দিকুর রহমান হাইকমান্ড-এর নেতৃত্বে এখানে যুদ্ধ হয়েছে। ট্রুপস কমান্ডার সুবেদার আবুল কাশেম ভারপ্রাপ্ত থানা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ, মোখলেছুর রহমান, সোলায়মান হাওলাদার, মুজাফ্ফর তালুকদার, জয়নাল পাটোয়ারী, আবু মিয়া সওদাগর, শশী মাস্টার, আবিদুল ইসলাম কানু, গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।
লালমোহন প্রথম দিকে থানায় মুক্তিযোদ্ধাদের স্থানীয় কোনো বিশেষ বাহিনী ছিল না। তবে সিরাজ সিকদারের বাহিনীর হয়ে এ থানার হারিছ আহম্মেদ, শাহাবুদ্দিন, গৌরাঙ্গ দাস, ছায়াকান্ত, রতন চক্রবর্তী প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন।
লালমোহনে প্রথম দিকে পাকসেনাদের কোনো স্থায়ী ক্যাম্প ছিল না। ভোলা সদর থেকে মাঝে-মধ্যে এসে তারা ধ্বংসযজ্ঞ, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চালাত। ৮ই মে বিকেলে তারা প্রথম সড়কপথে এখানে আসে এবং থানায় রাত্রি যাপন করে পরদিন সকালে চলে যায়। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে লঞ্চযোগে এসে তারা লাঙ্গলখালিস্থ সার্কেল অফিসারের কার্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং ৪-৫ দিন অবস্থানের পর আবার চলে যায়। ক্যাম্পে তারা একটি নকল কামান স্থাপন করে জনগণকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা করে। থানা এবং অস্থায়ী ক্যাম্পে তাদের অনুগত পুলিশ, শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজনদের ওপর তারা এখানে নির্যাতন চালাত।
লালমোহন থানার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শীর্ষস্থানীয়রা হলো- আবু মাওলানা (কালমা), ওবায়দুল্লাহ ভাসানী (কালমা), আলী হোসেন (হরিগঞ্জ), আচমত দফাদার, মোজাম্মেল উকিল (ফরাশগঞ্জ), ছাদেক হেকিম (লালমোহন), আবদুল হাই (লর্ডহার্ডিঞ্জ), মোস্তফা কামাল (লর্ডহার্ডিঞ্জ), আ. হাই, মীর খলিল প্রমুখ।
লালমোহনে স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী ও নেজামে ইসলামী সক্রিয় ছিল। এসব দলের লোকজন শান্তি কমিটি, আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা এলাকায় স্বাধীনতার পক্ষের লোকজন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য পাকবাহিনীর নিকট সরবরাহ করত। জনগণকে পাকিস্তানের পক্ষে রাখার চেষ্টা করত। পাকবাহিনীর সম্মুখে যাতে নির্ভয়ে-নিরাপদে চলতে পারে সেজন্য তারা নিজেদের লোকদের পরিচয় পত্র প্রদান করত।
৯ই মে মাওলানা ফয়জুল্লাহ মোহাদ্দেসকে (লালমোহন বাজার, ডাকবাংলোর পশ্চিম পাশে) সভাপতি, মোজাম্মেল উকিলকে সম্পাদক, মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরীকে (লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজার) কোষাধ্যক্ষ করে লালমোহনে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। শান্তি কমিটির উল্লেখযোগ্য সদস্যরা হলো— আ. কাদের মাস্টার (কিশোরগঞ্জ, ফরাশগঞ্জ), সাদেক হেকিম, মোহাম্মদ উল্যাহ ডাক্তার (নয়ানি), মাকসুদ মোল্লা (চরভূতা), মাওলানা আলী হোসেন (কালামিয়া চৌকিদার বাড়ি, গজারিয়া), নজরুল ইসলাম, বদিউল আলম (লালমোহন বাজার), আমজাদ হোসেন (লালমোহন বাজার; আলম নামে পরিচিত এবং আলবদর বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ছিল), আলী হোসেন, মকবুল আহাম্মদ (হরিগঞ্জ, চরভূতা), আ. হক মৃধা (ফরাসগঞ্জ), মাসুদ মোল্লা, ফজলে করিম মেম্বার, আচমত হাজী (কালমা), তৈয়বুর রহমান, গহর আলী চৌকিদার (কচ্ছপিয়া, বদরপুর), দেলোয়ার হোসেন (করিমগঞ্জ, ধলিগৌরনগর), হাবিবুর রহমান (ফরাসগঞ্জ), আছমত দফাদার, ছলেমান মাওলানা প্রমুখ। এছাড়া শফিকুর রহমান (লালমোহন বাজার)-কে কমান্ডার এবং মাওলানা আবুকে ডেপুটি কমান্ডার করে লালমোহনে আলবদর বাহিনী গঠন করা হয়। আলবদর বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সদস্যরা হলো- মাওলানা সাহাবুদ্দিন, সপু হাজী, ওবায়দুল্লাহ ভাসানী, মাওলানা লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ আলম, মাওলানা আবুল বশার, সেরাজ মুন্সী (কচ্ছপিয়া), এস কামাল (শান্তি কমিটির সভাপতি মাওলানা ফয়জুল্লাহর ছেলে), মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা মোতাহার, আবদুল শহীদ (মুন্সীবাড়ি, চরসকিনা) নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
আলী হোসেনকে কমান্ডার করে লালমোহনে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। রাজাকার বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সদস্যরা হলো- হাবিব মুন্সী, আলম, শাহিন, আ. রহিম, মজিবল, সাদেক চৌকিদার, আউয়াল ডাক্তার, জাহাঙ্গীর লুতু, হাবিব মুন্সী (ফরাসগঞ্জ), খোরশেদ মাওলানা (করিমগঞ্জ, ধলিগৌরনগর), গোলাম মাওলা, অহিদ মুন্সী, বদিউজ্জমান খলিফা, সামছল হক পাটওয়ারী (শাহাবাজপুর কলেজের কাছে), মৌলভী মকবুল (পাঙ্গাশিয়া), আবু তাহের মুজাফ্ফর, ওবায়দুল্লাহ মৌলভী, মফিজ, হজি, শফিকুল ইসলাম, নজির মুন্সী প্রমুখ।
পাকসেনাদের দোসর হিসেবে শান্তি কমিটি, রাজাকার বাহিনী ও আলবদর বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন অভিযানে পাকসেনাদের পথ দেখানো, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর চিনিয়ে দেয়ার কাজ করত। হিন্দুপ্রধান এলাকা লর্ডহার্ডিঞ্জ, কর্তার হাট, রায়চাঁদ, গজারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনের গরু-ছাগল ও স্বর্ণালংকার তারা লুট করেছে। এসব এলাকায় হিন্দুদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে তারা পরিচয় পত্র প্রদান করত এবং প্রতিসপ্তাহে উক্ত পরিচয় পত্র নবায়ন করতে হতো।
গজারিয়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরীর সহযোগিতায় পাকবাহিনী গজারিয়া বাজারের পশ্চিমে কচুখালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে আওলাদ (পিতা রশিদ হাওলাদার) ও গজারিয়া বাজারের ব্যবসায়ী বলাই চন্দ্র দেবনাথকে বাড়ির দরজায় গাছের সঙ্গে বেঁধে হত্যা করে। এ-সময় পাকবাহিনী লালমোহন থেকে ধরে ভোলায় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবু ছায়েদ মিয়া ও আবদুস শহীদকে হত্যা করে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা যে সমস্ত বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে সেখানে নারীদের ওপর নির্যাতন করেছে। সামাজিক কারণে অনোয়ারা খাতুন (গজারিয়া) ব্যতীত অন্য কারো নাম জানা যায়নি। মোতাহার উদ্দিন মাস্টার এমপিএ-র বাড়ি, সোলায়মান হাওলাদারের বাড়ি, রশিদ হাওলাদারের বাড়ি, দারা মৌলভীর বাড়ি, গজারিয়া বাজার, ডাওরী বাজার, মঙ্গল সিকদার বাজার, লর্ডহার্ডিঞ্জ বাজার, লালমোহন বাজার ও কচুখালী গ্রামে তারা অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে।
লালমোহন থানায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে লালমোহন থেকে ক্যাপ্টেন নাসিরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল বরিশাল গমনের পথে টংগীবাড়িয়া খালে পাকবাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। আক্রমণে দলটি দুভাগে বিভক্ত হয়ে একটি দল নাসিরের নেতৃত্বে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে তালতলীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে। ৭-৮ জনের অপর দলটি আবু ছায়েদের নেতৃত্বে লালমোহনে ফিরে আসে। ২১শে অক্টোবর লালমোহন থানা আক্রমণ একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এদিন ভোররাতে হাইকমান্ড সিদ্দিকুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বে ৮০-৮৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল লালমোহন থানা আক্রমণ করে। থানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকাররাও পাল্টা আক্রমণ চালায়। সারাদিন যুদ্ধের পর ২২শে অক্টোবর অপরাহ্ণে তারা আত্মসমর্পণ করলে লালমোহন থানা হানাদারমুক্ত হয়। থানা দখলের যুদ্ধে ৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি শত্রুপক্ষের গুলিতে শহীদ হন। উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হলেন- হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম (পিতা আজহার উদ্দিন আহমেদ, লালমোহন)।
লালমোহন উপজেলায় যে-সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম জানা যায়, তাঁরা হলেন- রফিকুল ইসলাম (পিতা আরশাদ মিয়া, কালমা; ২৫শে মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে শহীদ), নুরুল ইসলাম (পিতা আলী আকবর, লালমোহন পৌরসভা; ইপিআর সদস্য, ২৬শে মার্চ চট্টগ্রামে শহীদ), আবুল হোসেন (পিতা আজাহারউদ্দিন হাওলাদার, পাঙ্গাশিয়া, পশ্চিম চরউমেদ; ২৬শে মার্চ নারায়ণগঞ্জের আদমজী জুট মিলসে শহীদ), সোলায়মান হাওলাদার (পিতা নজির আহম্মদ, পাঙ্গাশিয়া; ১৭ই মে দেউলায় শহীদ), আবদুস সহিদ (ফুলবাগিচা; ২০শে মে ভোলা খেয়াঘাটে শহীদ), আবু ছায়েদ মিয়া (পিতা গাউছ মুন্সী, নয়ানী; ২৮শে মে ভোলা খেয়াঘাটে শহীদ), তানসেন মৃধা (পিতা হাচন আলী, দেবীর চর; ২৯শে অক্টোবর দেউলায় শহীদ) এবং আব্দুল জলিল (পিতা বাগন আলী, দেবীর চর; ২৯শে অক্টোবর দেউলায় শহীদ)।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে লালমোহন থানার পূর্বপার্শ্বে ভোলা-চরফ্যাশন মহাসড়কে একটি নামফলক স্থাপন হয়েছে। [মোবাশ্বির উল্যাহ চৌধুরী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড