লালচান চা-বাগান গণহত্যা (চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ)
লালচান চা-বাগান গণহত্যা (চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ) সংঘটিত হয় এপ্রিল মাসের শেষদিকে। এতে ১১ জন চা শ্রমিক শহীদ হন।
চুনারুঘাট থানার পশ্চিম ও উত্তরে এবং শাহজীবাজার রাবার বাগান সংলগ্ন স্থানে লাল চান চা-বাগানের অবস্থান। মুক্তিযোদ্ধারা সীমান্ত অতিক্রম করে মাঝে-মাঝে এ চা- বাগানে এসে পাকিস্তানি সৈন্যদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতেন। বাগানে তাঁদের তল্লাশির জন্য স্থানীয় রাজাকার উসমান গনি (পিতা রমিজ আলী, দোবায়রা) ও আব্দুল মন্নাফ (পিতা আনফর হাজী, গাংপাড়)-এর সহযোগিতায় এপ্রিল মাসের মাসের শেষদিকে পাকিস্তানি সৈন্যরা বাগানের ম্যানেজারকে দিয়ে শ্রমিকদের কারখানার সামনে এনে জড়ো করে। তাদের মধ্য থেকে ১১ জন শ্রমিককে পৃথক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শায়েস্তাগঞ্জ পাকসেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের অমানবিক নির্যাতন করে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনের উত্তর-পূর্ব কোণের পুকুরপাড়ে গুলি করে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়। এখানে শহীদরা হলেন- রাজকুমার গোয়ালা (পিতা কুমার গোয়ালা), লাল সাধু (পিতা হরিদাস সাধু), কৃষ্ণ বাউরি (পিতা বেহারী বাউরি, ইউপি মেম্বার), দীপক বাউড়ি (পিতা বক্ষেস্বর বাউড়ি), মহাদেব বাউড়ি (পিতা নিতাই বাউড়ি), সুনীল বাউড়ি (পিতা কৃষ্ণ বাউড়ি), নেপু বাউড়ি (পিতা সৈন্যাশী বাউড়ি), রাজেন্দ্র রায় (পিতা বেহারী বাউড়ি), গৌর বাউড়ি (পিতা বেহারী বাউড়ি), ভুবন বাউড়ি (পিতা কৃষ্ণ বাউড়ি) ও অনু মিয়া (পিতা আতাব আলী)। শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে বাগানের কারখানা সংলগ্ন রাস্তার পাশে ‘ওরা ১১ জন’ নামে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। [মিলন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড