লালপুর গণহত্যা (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
লালপুর গণহত্যা (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ১৪ই এপ্রিল। এতে ৫৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী হত্যার শিকার হয়।
ঘটনার দিন ভোরে পাকবাহিনী গানবোট থেকে লালপুরে আক্রমণ চালায়। লালপুরে তখন লে. হেলাল মোরশেদের নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের এক কোম্পানি সৈনিক মোতায়েন ছিল। ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনগণ প্রথমে এ আক্রমণ প্রতিহত করে। মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে শত্রুর মোকাবেলা করতে থাকে। কিন্তু ভৈরব বাজার থেকে পাকবাহিনী দূরপাল্লার কামান এবং কয়েকটি গানবোট নিয়ে এক নাগারে আক্রমণ চালালে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। পরে পাকবাহিনী লালপুরে ঢুকে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। বাড়িঘর ও বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ-সময় তারা যাকে যেখানে পেয়েছে তাকেই সেখানে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে। লালপুর গণহত্যায় ৫৭ জন মানুষ নিহত হয়। তাদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন- হাজী মহরম আলী ও তার ছেলে মো. শহিদুল্লাহ (এমএসসি), যোগেশ চন্দ্র দাস, পণ্ডব শর্মা, মো. মন্তাজ মিয়া, সুরুজ মিয়া, মো. ইদ্রিস মিয়া, লক্ষিণধর, আবুল মিয়া, মুক্তারের নেছা, ব্রজেন নাথ, ঈশ্বর চন্দ্র দাস, হরচরণ দাস, নগেন চন্দ্র দাস, উপেন্দ্র দাস, জীবন চন্দ্র দাস, মহাদেব দাস, হরেন্দ্র চন্দ্র দাস, মিনতি রানী দাস, অশ্বিনী দেবনাথ, মো. জয়নাল আবেদীন, বাধ্যরানী দাস, নিরান চন্দ্র দাস, মো. কুদ্দুস মিয়া, রাশমান দাস, কুদ্দুস মিয়া, তার মা, কালাচন্দ্র দাস, সাধন চন্দ্র দাস, পূর্ণ মোহন দাস, রায় মোহন দাস, জুম্মত আলী ও আব্দুস সালাম মাস্টার (মুক্তিযোদ্ধা)-এর মা। [আমির হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড