You dont have javascript enabled! Please enable it!

লালপুর প্রতিরোধযুদ্ধ (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

লালপুর প্রতিরোধযুদ্ধ (আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ১৪ই এপ্রিল। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হন। এরপর পাকবাহিনী ঐ এলাকায় জ্বালাও-পোড়াও করে এবং ৫৭ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করে।
১৩ই এপ্রিল একটি পাক-নৌবহর লালপুরের দিকে আসে। পাকিস্তানি সৈন্য অবতরণের স্থান নির্ধারণ করার জন্য তারা এখানে আসে। লেফটেন্যান্ট হেলাল মোরশেদের নেতৃত্বে পূর্ব থেকে প্রস্তুত থাকা মুক্তিবাহিনীর লক্ষ্য-সীমার মধ্যে প্রবেশ করামাত্র নৌ-বহরের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেক গুলি বিনিময়ের পর শত্রুপক্ষ দক্ষিণে ভাটির দিকে চলে যেতে বাধ্য হয়। সেদিন রাতেই ক্যাপ্টেন মতিন এক কোম্পানি ইপিআর নিয়ে সরাইল থেকে লালপুরে এসে লালপুর ঘাঁটির শক্তি বৃদ্ধি করেন। ১৪ই এপ্রিল ভোরে পাকবাহিনী গানবোট থেকে লালপুরে আক্রমণ চালায়। তখন লেফটেন্যান্ট হেলাল মোরশেদের নেতৃত্বে দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের কোম্পানি সৈনিক, ইস্ট বেঙ্গল, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনগণ প্রথমে এ আক্রমণ প্রতিহত করে। মুক্তিযোদ্ধারা অসীম সাহসের সঙ্গে শত্রুর মোকাবেলা করছিলেন। কিন্তু তখন ভৈরব বাজার থেকে পাকবাহিনী দূরপাল্লার কামান দিয়ে গোলাবর্ষণ এবং কয়েকটি গানবোট নিয়ে এক নাগারে আক্রমণ চালাতে থাকে। পাকহানাদার বাহিনীর জল, স্থল ও বিমান হামলার মুখে এক সময় মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। পরে পাকবাহিনী লালপুরে ঢুকে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। বাড়িঘর ও বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ-সময় পাকবাহিনী যাকে যেখানে পেয়েছে তাকেই সেখানে পাখির মতো হত্যা করেছে। সেদিন ৫৭ জন মানুষ পাকবাহিনীর বর্বরতার শিকার হয়। [আমির হোসেন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!