লাউফা গণহত্যা (বারহাট্টা, নেত্রকোনা)
নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার আসমা ইউনিয়নস্থ লাউফা গ্রামের রুজ আলী তালুকদারের বাড়িতে অক্টোবর মাসে পাকবাহিনী এ গণহত্যা চালায়। তারা ধর্ষণ ও অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত করে। নেত্রকোনা মহকুমা আলবদর বাহিনীর নেতা ওবায়দুল হক তাহের, স্থানীয় রাজাকার খালেক মৌলানা, আজব আলী, নূরুল ইসলাম, আলবদর সদস্য আবুল হাশেম ও শান্তি কমিটির সদস্য মিসির আলী খান পাকসেনাদের সহযোগিতা করে।
নেত্রকোনা জেলা সদরের সঙ্গে মোহনগঞ্জ উপজেলার সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকায় বারহাট্টায় পাকবাহিনী কোনো স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেনি। তবে পুরাতন ডাকবাংলোটিকে তারা অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করত। এছাড়া থানায় মাঝে-মাঝে পাকিস্তানি সেনারা অবস্থান করত।
লাউফা গ্রামটি বারহাট্টা উপজেলা সদর থেকে ১.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি রুজ আলী তালুকদার স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য, আশ্রয় ও খাবার দিয়ে সহযোগিতা করতেন। এজন্য স্থানীয় রাজাকার খালেক মৌলানা, আজব আলী, নূরুল ইসলাম, আলবদর সদস্য আবুল হাশেম এবং শান্তি কমিটির সদস্য মিসির আলী খান পাকসেনাদের দিয়ে রুজ আলী তালুকদারের বাড়িতে গণহত্যা চালায়। এতে লাউফা গ্রামের ৬ জন ও মৌআটি গ্রামের একজন প্রাণ হারান। এদিন পাকসেনারা বাউসি ইউনিয়নে ৮-৯ জন মহিলাকে ধর্ষণ করে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাওয়ার সময় সারা বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
গণহত্যায় লাউফা গ্রামের নিহত ব্যক্তিরা হলেন- রোজ আলী তালুকদার (পিতা আতে হোসেন তালুকদার), জাফর আলী তালুকদার (পিতা আতে হোসেন তালুকদার), মশরব আলী (পিতা আতে হোসেন তালুকদার), আলাউদ্দিন (পিতা জাফর আলী), জাহেদ আলী তালুকদার (পিতা ইয়াদ আলী তালুকদার) ও আব্দুল জব্বার (পিতা কলিম শেখ)। এখানে মৌআটি গ্রামের ফজলুর রহমান তালুকদার (পিতা মফিজ উদ্দিন তালুকদার) প্রাণ হারান। [মোহাম্মদ আলী জুয়েল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড