লাওকরা যুদ্ধ (হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর)
লাওকরা যুদ্ধ (হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। এতে ১০ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। অপরপক্ষে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
হাজীগঞ্জ উপজেলাস্থ লাওকরা গ্রামের মজুমদার বাড়িতে পাকবাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। কমান্ডার আবুল খায়ের (যুদ্ধকালীন নাম উল্কা খায়ের)-এর নেতৃত্বে সিরাজুল ইসলাম (যুদ্ধকালীন নাম মোহন) ও আবদুল হাইসহ হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, কচুয়া, মুড়াগাঁত্ত, আলীপুর, শমেশপুর, বিলওয়াই প্রভৃতি এলাকার ৩০ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধা এ-যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধটি সংঘটিত হওয়ার ২-৩ দিন পূর্বে ঐ বাড়িতে চোম্বা ফকির নামে একজন রাজাকার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। এদিকে কমান্ডার আবুল খায়েরের নেতৃত্বে ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে লাওকরা হয়ে হাজীগঞ্জ যাওয়ার পথে নিরাপত্তাজনিত কারণে লাওকড়া মজুমদার বাড়িতে আশ্রয় নেন। চোম্বা ফকিরের ছেলে রাতেই হাজীগঞ্জ গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের কথা রাজাকারদের জানায়। রাজাকাররা হামিদিয়া জুট মিলে অবস্থানরত পাকবাহিনীকে বিষয়টি জানায় এবং তাদের সহযোগিতায় ভোর ৪টায় ঐ বাড়িতে আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ করেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে দুপুরের দিকে তারা অবস্থান ত্যাগ করেন। এ-যুদ্ধে ১০ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা লাওকরা যুদ্ধে শহীদ হন। শহীদদের মধ্যে যাঁদের নাম জানা গেছে, তাঁরা হলেন- জহির, ইলিয়াছ ও সলিমত উল্লাহ। [জহিরুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড