You dont have javascript enabled! Please enable it!

রায়পুর রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর)

রায়পুর রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর) পরিচালিত হয় ১লা আগস্ট। এতে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং দুজন রাজাকার নিহত হয়। ৩১শে জুলাই ভোরবেলা কমান্ডার হাবিলদার আবদুল মতিন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা রায়পুর রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুতি নেন। আক্রমণের পরিকল্পনা অনুযায়ী রায়পুর কাফিলাতলী সড়কের মুখে ইপিআর-এর নায়েক আবদুর রশীদের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল মোতায়েন করা হয়। নায়েক আলতাফ হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জনের অপর একটি দল এল এম হাইস্কুলের দক্ষিণ প্রান্তে খালের দক্ষিণ পাশে এম্বুশ নেয়। বাকি ২০ জন ছিলেন কমান্ডার আবদুল মতিনের নেতৃত্বে। এই ২০ জনের মধ্যে ছাত্র গ্রুপের এজাজ, হামদে রাব্বি, নবী নেওয়াজ বকুল এবং কায়কোবাদ-সহ অন্যরা ছিলেন। এই গ্রুপটি অবস্থান নেয় রায়পুর আলিয়া মাদ্রাসা এবং মীরগঞ্জ সড়কের মুখে। আগস্টের ১ তারিখ রাজাকারদের প্রশিক্ষণ সেন্টার আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনের খবর রাজাকাররা জেনে যায়। তারা হঠাৎ গুলি ছুড়লে মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার শহীদ হন। গুলির শব্দ শুনে কমান্ডার আবদুল মতিন দ্রুত পাল্টা গুলি করলে একজন রাজাকার নিহত হয়। কমান্ডার আবদুল মতিন নিজের অস্ত্র পাশে রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পান এক রাজাকার হামাগুড়ি দিয়ে তাঁর কাছাকাছি এসে পৌঁছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশারের এসএলআরটি নিয়ে গুলি করতে উদ্যত হচ্ছে। এ অবস্থায় কমান্ডার মতিন দ্রুত এগিয়ে গিয়ে এসএলআর-এর মাথা জাপটে ধরেন। কিছু দূর থেকে মুক্তিযোদ্ধা এজাজ ও হামদে রাব্বি এ দৃশ্য দেখতে পান এবং এজাজ তাঁর এসএমজি দিয়ে গুলি করলে ঐ রাজাকারও নিহত হয়। অতঃপর কমান্ডার আবদুল মতিন নিজের অস্ত্র, শহীদ বাশারের অস্ত্র এবং নিহত রাজাকারদ্বয়ের অস্ত্র নিয়ে নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।
এদিকে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা কায়কোবাদ (পরবর্তীতে অতিরিক্ত সচিব পদ থেকে অবসরপ্রাপ্ত) শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশারের মৃতদেহ ও নিজের অস্ত্র নিয়ে বুক পরিমাণ পানি পার হয়ে একটি বসতবাড়িতে এসে আশ্রয় নেন। শহীদ বাশারকে যেখানে সমাহিত করা হয়, ঐ স্থানের নামকরণ করা হয় বাসুর হাট। [গাজী গিয়াস উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!