You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে রুমা উপজেলা (বান্দরবান) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে রুমা উপজেলা (বান্দরবান)

রুমা উপজেলা (বান্দরবান) বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৪৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। ১৯১৭ সালে রাঙ্গামাটি জেলার বান্দরবান মহকুমার অধীনে রুমা, বলিপাড়া ও থানচি ইউনিয়ন নিয়ে রুমা থানা গঠিত হয়। ১৯৭৬ সালে থানচি ইউনিয়নকে বাদ দেয়া হয় এবং ১৯৮৩ সালে রুমা থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
অসংখ্য পাহাড়-পর্বত ও বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ রুমা উপজেলা। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং, সর্বোচ্চ পর্বতমালা কেউক্রাডং, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে তিন হাজার ফুট উচুঁতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বিশাল জলাধার বগালেক এবং ঋজুক জলপ্রপাত এ উপজেলায় অবস্থিত। উপজেলার উত্তরে রোয়াংছড়ি উপজেলা, পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা, দক্ষিণে থানচি উপজেলা এবং পশ্চিমে বান্দরবান সদর ও লামা উপজেলা। বর্তমানে এ উপজেলায় ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। সেগুলো হলো— ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন, ২নং রুমা ইউনিয়ন, ৩নং রেমাক্রীপ্রাংসা ইউনিয়ন ও ৪নং গ্যালেংগা ইউনিয়ন। এ উপজেলায় ১৩টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাস এবং বাঙালিদের মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা বেশি। মোট জনসংখ্যা ছিল ৭-৮ হাজারের মতো। রুমা বাজারই ছিল উপজেলার কেন্দ্রবিন্দু।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি ও ষড়যন্ত্র করে। এর প্রতিবাদে সারাদেশে পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালিরা সংগঠিত হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করছিল। তখন এ উপজেলার লোকজনও সামগ্রিক ঘটনার ব্যাপারে সচেতন হয়ে ওঠে। তারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করতে থাকে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রথমদিকে এখান থেকে লোকজন সীমান্তের ওপারে যায়নি। তবে ইপিআর সদস্য আর শরণার্থীরা যখন দলে-দলে এখান হয়ে সীমান্তের ওপারে যাচ্ছিল, তখন কিছুকিছু স্থানীয় লোক তাদের সঙ্গে সীমান্তের ওপারে চলে যায়। দিনদিন অত্র এলাকায় ভারতগামী শরণার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাদের স্থানীয় স্কুল, রুমা পাবলিক ক্লাব ও ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় দেয়া হয়। তাদের খাওয়া-দাওয়া ও সীমান্তের ওপারে চলে যাওয়ার জন্য পথ দেখানোর ব্যবস্থা করতেন গোলাম কাদের (ব্যবসায়ী), উপেন্দ্ৰ মল্লিক, ডাক্তার রেবতি রঞ্জন দাশ, সুভাষ চন্দ্ৰ দাশ (ব্যবসায়ী)-সহ স্থানীয় লোকজন। এসব কাজে আবদুল জলিল (পিতা গোলাম কাদের), আবদুল জলিল (পিতা ওয়াজেদ আলী), হিমাংশু মল্লিক, দয়াল হরি দাশ প্রমুখ স্থানীয় যুবক সহযোগিতা করতেন।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঐতিহাসিক ভাষণ স্থানীয় লোকজন পরের দিন রেডিওর মাধ্যমে শোনে। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে সবাইকে গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান।
২৫শে মার্চ ঢাকায় গণহত্যার খবর রেডিওর মাধ্যমে পরের দিন ২৬শে মার্চ স্থানীয় লোকজন জানতে পারে। এরপর থেকে দলে-দলে লোকজন রুমা উপজেলায় আসতে থাকে। তাদের অধিকাংশই ছিল চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, পটিয়া, বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও আনোয়ারা উপজেলার অধিবাসী। রুমার মধ্য দিয়ে সীমান্ত পার হয়ে তারা ভারতে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে।
কালুরঘাটে প্রতিরোধযুদ্ধে বাঙালি ইপিআর সদস্যরা পাকিস্তানিদের সঙ্গে না পেরে রুমায় আসতে থাকেন এবং সীমান্তের ওপারে চলে যান। স্থানীয়রা তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা এবং পথ দেখিয়ে সহযোগিতা করেন। ইপিআর সদস্যদের কেউ-কেউ রুমা থানায় অবস্থান নেন। রুমা থানার ওসি আবদুল খালেক চৌধুরী ও ইপিআর কমান্ডার স্থানীয় যুবকদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এপ্রিলে এখানে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। রুমা থানার মাঠে এ প্রশিক্ষণ চলে। প্রশিক্ষণ নেয়া যুবকদের মধ্যে আবদুল জলিল (পিতা ওয়াজেদ আলী), হিমাংশু মল্লিক (পিতা উপেন্দ্ৰ লাল মল্লিক), গৌরাঙ্গ মেম্বার, কালা বাসী, নিত্য মল্লিক, দয়াল হরি দাশ (পিতা ডাক্তার রেবতি রঞ্জন দাশ), স্বপন দাশ, বাদল দাশ, সম্ভু দাশ, রঞ্জিত দাশ, মো. আবদুল জলিল (পিতা গোলাম কাদের) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এঁদের মধ্যে সুকুমার দাশ ছিলেন কমান্ডারের দায়িত্বে। রুমা থানার মোট ২৩ জন যুবক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বহিরাগত বেশকিছু শরণার্থী যুবকও ছিল। তাদের প্রশিক্ষণ দেন ইপিআর কমান্ডার ও থানার ওসি আবদুল খালেক চৌধুরী। তখন এখানে প্রায় ১০০-র মতো ইপিআর সদস্য ছিলেন। প্রথম ৩-৪ দিন পুলিশ সদস্যরা প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। ১৭দিন একটানা প্রশিক্ষণের পর হঠাৎ খবর আসে যে, পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টার যোগে রুমায় আসবে এবং চারদিকে ঘেরাও করবে। এর ফলে রুমা পাবলিক ক্লাবে রাতে ইপিআর ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকরা বৈঠকে বসেন। পরদিন ইপিআর সদস্যরা নিরাপদ স্থানে চলে যান এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের কেউ-কেউ তাঁদের সঙ্গে, কেউ-বা যে যার মতো নিরাপদ স্থানে চলে যান। হিমাংশু মল্লিক ও দয়াল হরি দাশ ভারতীয় সীমান্তের দিকে চলে যান। এ উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলেন সুকুমার দাশ।
পাকিস্তানি বাহিনী রুমা উপজেলায় প্রবেশ করেনি। তবে বিদ্রোহী মিজো বাহিনীর সদস্যরা ছিল। তাদের অবস্থান ছিল চৈ চং পাড়ায়। তারা ১৯৬৫ সালেই বাংলাদেশের সীমানায় অবস্থান নিয়েছিল। যুদ্ধের সময় তারা রুমার সীমান্তবর্তী রেমাক্রি-থ্রাংচায় ক্যাম্প করে অবস্থান নেয়। তারা সংখ্যায় ছিল একশর মতো। তারা পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষে কাজ করে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে কিছু সংখ্যক মিজো রুমা থানায় আসে। তারা স্থানীয় শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের সঙ্গে থাকত।
রুমা উপজেলায় শান্তি কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকে এখানকার পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। এপ্রিল মাসের শেষদিকে বান্দরবান থেকে পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী বোমাং রাজা অং শৈ প্রু চৌধুরী রুমায় আসে। তার সঙ্গে আরো ৩- ৪ জন ছিল। তারা রুমা বাজারে এসে প্রথমে শুধাংশু মহাজনের দোকানে ওঠে।
রুমা বাজারে একটি পাবলিক ক্লাব ছিল। সুধাংশু মহাজনের দোকানে বেশ কিছুক্ষণ কাটানোর পর অংশৈ প্রু চৌধুরী তার সাঙ্গোপাঙ্গসহ পাবলিক ক্লাবে আসে। সেখানে ২৫-৩০ জন লোক এসে জড়ো হয়। অং শৈ প্রু চৌধুরী শান্তি কমিটি গঠনের কাজ শুরু করে। এখানে রাজাকার বাহিনীও গঠন করা হয়। রাজাকারের লিডার করা হয় আবদুর রশিদকে। সে পেশায় ছিল কসাই। মার্মা সম্প্রদায় থেকে রাজাকারের লিডার করা হয় চিং সা অং-কে। তার বড় দুই ভাইও রাজাকার ছিল। বম ও মারমা সম্প্রদায় থেকে ৮-১০ জন রাজাকার ছিল।
ক্লাবে বসে কমিটি গঠন শেষে অং শৈ প্রু চৌধুরী ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা বাজারের দক্ষিণ দিকে ইউনুস মিস্ত্রির দোকানে যায় এবং সেখানে একটি সভা করে। সন্ধ্যার দিকে মং শোয়েপ্রু চৌধুরী তার দলবল নিয়ে বান্দরবান চলে যায়। জুন মাসের দিকে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা রুমা বাজারের ব্যবসায়ীদের দোকানে-দোকানে হানা দেয়৷ বিশেষ করে যে-সমস্ত ব্যবসায়ীর ছেলেরা প্রশিক্ষণ নিয়েছিল আর ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল, তাদের টার্গেট করা হয়। একদিন স্থানীয় শান্তি কমিটির নেতা সৈয়দ আহমদ, ইউসুফ আলী, আসহাব মিয়াসহ ৫-৭ জন রাজাকার উপেন্দ্র লাল মল্লিকের দোকানে আসে। উপেন্দ্র মল্লিকের ধান-চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ব্যবসা ছিল। দোকান ভর্তি তখন মালামাল। রাজাকাররা উপেন্দ্র মল্লিককে দোকান থেকে বের করে দিয়ে দোকানে সিল মেরে চলে যায়। দু-একদিন রুমা বাজারে থাকার পর উপেন্দ্র মল্লিক সীমান্তের দিকে চলে যান। এদিকে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা তার দোকানের সমস্ত মালামাল নিয়ে যায়। এরপর তারা বাজারের দক্ষিণ দিকে সুবল চন্দ্র দাশের বড় গুদামে যায়। সুবল চন্দ্র দাশ ছিলেন রুমা বাজারের বয়োজ্যেষ্ঠ এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। রাজাকারদের ভয়ে তিনি আগেই ভারতে চলে গিয়েছিলেন। শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা তার গুদামের সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
রাজাকাররা হাট-বাজার, গ্যালেংগা, পলিপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে শরণার্থী ও স্থানীয় লোকজনদের মালামাল লুটপাট করত। পলিকাপাড়ায় (বর্তমানে থানচি উপজেলার অন্তর্গত) লুটপাটের নেতৃত্ব দেয় জিকু চেয়ারম্যান। শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা প্রায়শই শরণার্থীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সা যখন যা পেত জোর করে ছিনিয়ে নিত, হত্যার হুমকি দিত।
যদিও পাকিস্তানি বাহিনী রুমা উপজেলায় প্রবেশ করেনি, তবে তাদের দোসর শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত বন্দুক নিয়ে রুমা বাজারে চলাফেরা করত। এপ্রিলের প্রথম দিক থেকেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, পটিয়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী প্রভৃতি এলাকা থেকে লোকজন এসে রুমা হয়ে সীমান্ত পাড়ি দিত। রুমার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সুভাষ চন্দ্র দাশ তার গোলা উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন শরণার্থীদের খাবারের জন্য।
আগস্ট মাসে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা বাজারে এসে মুক্তিযোদ্ধা দয়াল হরি দাশের পিতা ডাক্তার রেবতি রঞ্জন দাশকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে নানারকম প্রশ্ন করে। এক পর্যায়ে রাজাকাররা তাঁর ওপর টর্চার করে এবং তাঁর দোকানের ওষুধপত্র লুট করে নিয়ে যায়। রাজাকার রুই বে অং আর দারোগা ফজলের নেতৃত্বে রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা প্রায় সময় তাঁর ওপর অত্যাচার করত। এ কারণে ডাক্তার রেবতি রঞ্জন দাশ লোহাগাড়ায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে চলে যান। রাজাকাররা তাদের লোহাগাড়া ঘাঁটিতে খবর পৌঁছায় যে, ডাক্তার রেবতি রঞ্জন সেখানে পালিয়েছে। তারা আরো জানায় যে, ডাক্তার রেবতি রঞ্জন দাশ তাঁর ছেলেদের টাকা-পয়সা দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে এবং সে রুমা বাজারে বসে পাকিস্তানিদের বিভিন্ন খবরাখবর মুক্তিযোদ্ধাদের সরবরাহ করে। এরপর একদিন লোহাগাড়া বাজার থেকে রাজাকাররা ডাক্তার রেবতি রঞ্জন দাশকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাঁর আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
জুনের দিকে ৮-১০ জন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল ওহাবের নেতৃত্বে রুমায় আসেন এবং থ্রাঞ্চাপাড়ায় অবস্থান নেন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করে। তাঁদের আসার খবর পেয়ে স্থানীয় শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে যায়। শান্তি কমিটির সদস্য আসাব মিয়া, ফজল, ইউসুফ আলী, দারোগা ফজল, রাজাকার কমান্ডার রুই বে অং হেডম্যানসহ সবাই নদীর পশ্চিম পাড়ে খামার বাড়িতে (পলু মহাজনের চর নামে পরিচিত) আশ্রয় নেয়। তারা ডাক মাঝির মাধ্যমে বান্দরবানে খবর পাঠায় যে, রুমায় মুক্তিযোদ্ধারা এসেছে। বান্দরবানের রাজাকার প্রধান অং শৈ প্রু চৌধুরীর কাছে এ খবর পৌঁছলে পাকিস্তানি সৈন্যসহ রাজাকাররা রুমা সীমান্ত পেরিয়ে কেসিংঘাটায় এম্বুশ করে। কেসিংঘাটা ছিল পাকসেনা ও রাজাকারদের ঘাঁটি। এর পরের দিন রুমা থেকে আবদুল ওহাবের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নৌকা করে বান্দরবানের দিকে যাওয়ার পথে কেসিংঘাটায় পৌঁছলে পাকসেনা ও রাজাকাররা তাঁদের আক্রমণ করে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণ করেন এবং লালিট্টায় মুজিব বাহিনী-র সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর মাস খানেক শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা রুমায় আসেনি। আগস্ট মাসের দিকে তারা যখন জানতে পারে যে, মুক্তিযোদ্ধারা রুমায় নেই তখন তারা আবার রুমায় ফিরে আসে।
মিজো বাহিনীর সদস্যরা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পালিয়ে যায় এবং শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা গা ঢাকা দেয়। সে হিসেবে ১৬ই ডিসেম্বর রুমা উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। [ইয়াছিন রানা সোহেল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড