You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক রুহুল আমিন - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক রুহুল আমিন

রুহুল আমিন, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৩) অনারারি ক্যাপ্টেন ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৩ সালে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলাধীন বক্তারমুন্সি ইউনিয়নের অন্তর্গত মঙ্গলকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম ফুলবিয়া খাতুন এবং পিতার নাম আব্দুল জব্বার।
রহুল আমিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যশোর সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। মার্চ মাসের শুরু থেকে তিনি চৌগাছায় শীতকালীন প্রশিক্ষণে নিয়োজিত ছিলেন। প্রশিক্ষণ শেষে ২৯শে মার্চ রাতে সেনানিবাসে ফিরে আসেন। এ- সময় বাঙালি সৈনিকদের কৌশলে নিরস্ত্র করা হয় এবং দরবার হলে তাঁদের হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এ খবর জানতে পেরে রুহুল আমিনসহ বাঙালি সৈনিকরা ৩০শে মার্চ অস্ত্রাগার ভেঙ্গে বিদ্রোহ করে পাকিস্তানি সৈনিকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু করেন। দিনব্যাপী যুদ্ধের পর তাঁরা চৌগাছায় একত্রিত হন এবং সেখান থেকে ক্যাপ্টেন হাফিজের নেতৃত্বে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। রুহুল আমিন সিলেট ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থানের যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। ১৪ই ডিসেম্বর সকালে সিলেট এম সি কলেজের উত্তর পাশে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহস ও অসাধারণ রণকৌশলের কারণে পাকহানাদার বাহিনী হেরে যায় এবং বহু সংখ্যক পাকসেনা হতাহত হয়। রুহুল আমিন এ-যুদ্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে অন্য কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তিনিও আহত হন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনারারি ক্যাপ্টেন রুহুল আমিনকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৩ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম আনোয়ারা বেগম। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড