You dont have javascript enabled! Please enable it!

রামদিয়া গণহত্যা (বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী)

রামদিয়া গণহত্যা (বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী) সংঘটিত হয় ৯ই মে। পাকবাহিনী ২১শে এপ্রিল গোয়ালন্দ ঘাট দিয়ে রাজবাড়ীতে প্রবেশের পর বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ক্যাম্প স্থাপন করে। সেসব ক্যাম্পে অবস্থান নিয়ে তারা বাঙালি নিধনের জন্য এলাকার অবাঙালি বিহারি ও রিফিউজি কলোনির যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়। সশস্ত্র সেসব যুবক স্থানীয় শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনীর সঙ্গে মিলে গ্রামে-গ্রামে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ করে। তারা ঘরে-ঘরে তল্লাশি চালায় এবং নিরীহ গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি দেখায়। এমনকি তারা তাদের ওপর অত্যাচার চালায় এবং কোথাও- কোথাও লুটতরাজ, ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যার ঘটনাও ঘটায়। এরকম একটি গণহত্যা ঘটে বালিয়াকান্দি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম রামদিয়ায়। এতে অসংখ্য নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়।
৯ই মে ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় উৎসব। এ উপলক্ষে রামদিয়া গ্রামে হাজার-হাজার লোকের সমাবেশ ঘটে। এ সমাবেশে হামলা করার জন্য একটি স্পেশাল ট্রেনে করে পাকসেনারা রামদিয়া রেল স্টেশনে আসে। তারপর স্টেশন মাস্টার রোকন উদ্দিন, রাজাকার চাঁদ খাঁ, রমজান খাঁ, সবদাল হোসেন, গোলাম রহমান, জমির রিফিউজি, আজিজুল ইসলাম (বেড়াডাঙ্গা) ও পোনা মিয়াসহ তারা ঐ উৎসবস্থলে গিয়ে হামলা চালায়। তারা সেখানে আগুন দেয় এবং নির্বিচারে গুলি করে। আগুনে প্রায় পাঁচশত নর-নারী ও শিশু জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
অত্র এলাকার গণহত্যার এক লোমহর্ষক দৃষ্টান্ত রামদিয়া। এ নিষ্ঠুর গণহত্যার শিকার সকল শহীদের নাম-পরিচয় কোনোদিন পাওয়া যাবে না। বড়বাড়ি নামে পরিচিত স্থানীয় সাবেক জমিদার একমাত্র রায় পরিবারের যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন— নির্মল শঙ্কর রায়, অখিল শঙ্কর রায়, অটল শঙ্কর রায়, বীণাপাণি রায়, সরল শঙ্কর রায়, শান্তিলতা রায়, ধবল শঙ্কর রায় এবং সরল শঙ্কর রায়। [এম ইকরামুল হক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!