You dont have javascript enabled! Please enable it!

রামনগর যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর)

রামনগর যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর) সংঘটিত হয় ১৮ই আগস্ট। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব যুদ্ধ হয়, রামনগর যুদ্ধ ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পাকবাহিনীর বামুন্দি ক্যাম্প থেকে ৫ কিমি উত্তরে রামনগর এবং চরগোয়াল গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে এ- যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ স্থানটিকে রামনগরের তিন রাস্তার মোড় বা দেবদারুর মোড়ও বলা হয়। যুদ্ধে ১২ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়।
ভারতের শিকারপুর একশন ক্যাম্প থেকে সাব-সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জাহাঙ্গীরের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে এসে রামনগর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এ-যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার আজগর আলী এবং নায়েক আব্দুল লতিফ। তাঁদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দুভাগে বিভক্ত হয়ে যুদ্ধে অংশ নেন।
বামুন্দি ক্যাম্প থেকে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোয় প্রায় প্রতিদিন পাকিস্তানি সৈন্যরা টহল দিত। তারা সাধারণ মানুষের ওপর জুলুম-নির্যাতন ও লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করত। এসব খবর পেয়ে এ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা শিকারপুর একশন ক্যাম্পে বসে রামনগর যুদ্ধের পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন তাঁরা মনি মাঝির নৌকায় মাথাভাঙ্গা নদী পেরিয়ে গোয়াল গ্রামের আজাহার ফরাজি এবং আজিমুদ্দীন শাহ্র বাড়িতে আশ্রয় নেন। সন্ধ্যার পরপরই তাঁরা রামনগর মোড়ে এসে দুভাগে ভাগ হয়ে রাস্তার দুপাশে পজিশন নিয়ে পাকসেনাদের অপেক্ষায় থাকেন। হাবিলদার আজগর আলীর নেতৃত্বে নায়েক মুছা, নায়েক আজিজুল, সিপহি আব্দুল করিম, নওশাদ, বারি ও সানাউল্লাহ রাস্তার একপাশে এবং নায়েক আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে নায়েক হাতেম আলী, নায়েক আব্দুল্লাহ, বরকতউল্লাহ, মোমেন, ওয়াজেদ ও জীবন অন্য পাশে এম্বুশ নেন। বামুন্দি ক্যাম্প থেকে আগত পাকিস্তানি সৈন্যের একটি প্লাটুন নাগালের মধ্যে আসতেই মুক্তিযোদ্ধাদের চারটি এলএমজি একযোগে গর্জে ওঠে। এ আক্রমণে প্রায় পুরো প্লাটুন ধরাশায়ী হয়। মটমুড়া এলাকা থেকে পাকিস্তানি সেনাদের কভারিং ফায়ার এবং মর্টার শেলিং শুরু হলে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। রামনগর যুদ্ধে ১২ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। [রফিকুর রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!