You dont have javascript enabled! Please enable it! রামদিয়া গণকবর (বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী) - সংগ্রামের নোটবুক

রামদিয়া গণকবর (বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী)

রামদিয়া গণকবর (বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী) রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে স্থানীয় বিহারি ও রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী গণহত্যা চালায় এবং মৃতদের গণকবর দেয়। নিহতদের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শরণার্থীরাও ছিল। তাদের কাউকে গুলি করে, কাউকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এসব হত্যাকাণ্ডের দুজন প্রত্যক্ষদর্শী হলেন শহীদ অবিনাশ চন্দ্র সাহার স্ত্রী ননীবালা সাহা এবং তার পুত্রবধূ। তারা জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থেকে জল্লাদদের নৃশংস হতাকাণ্ডের কিছু ভয়ঙ্কর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন।
রামদিয়ায় বহু লোককে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়। কিন্তু সকলের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন— অবিনাশ চন্দ্র সাহা, মলয় সাহা (পিতা অবিনাশ চন্দ্র সাহা), তার ভাই মণীন্দ্র সাহা ও বিনয় ভূষণ দত্ত। এদেরকে একই গর্তে মাটিচাপা দেয়া হয়। চণ্ডীচরণ সাহার বাড়িতে কবর দেয়া হয় নিত্য লাল সাহা, বিজয় লাল সাহা, রাধা বণিক দত্ত, নির্ণয় দত্ত, অবিনাশ সাহা, মঙ্গল সাহা, বিশ্বনাথ শীল, তার স্ত্রী, দেব্রতী সাহা, পরিমল সাহার মা ও তার স্ত্রীকে। হরিদাসী সাহা, হৃদয় নাথ সাহা, উর্মীলাল সাহা, প্রমথনাথ সাহা, আরতী সাহা (পিতা যতীন্দ্রনাথ সাহা), প্রমীলা সাহা (পিতা পূর্ণচন্দ্র সাহা)-কে হত্যার পর একই গর্তে মাটিচাপা দেয়া হয়। ষষ্টি চরণ সাহার মা, অমল সাহা এবং নীরোদ কুমার সাহাকে গুলি করে হত্যার পর তাদের নিজ বাড়িতে একইভাবে মাটিচাপা দেয়া হয়। পাবনা ও সূর্যনগর থেকে আগত কয়েকজন একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদেরকে একটি ঘরে আটকে রেখে গুলি চালানো হয়। তাতে সন্তোষ রায়, শান্তি বালা, কেষ্ট লাল সাহা, যতীশ চন্দ্র সরকার এবং গৌর চন্দ্র শহীদ হন। এদের রামদিয়া স্কুলের পেছনের বাড়িতে কবর দেয়া হয়। নিবারণ সাহা নামে একজন বাড়ি আসার পথে গুলিবিদ্ধ হন। তাকে নিজেদের বাড়ির উঠানে সমাহিত করা হয়। এছাড়া নির্মল শঙ্কর রায় নামে একজন অমানবিক অত্যাচারে শহীদ হন। তাঁকেও মাটিচাপা দেয়া হয়। [এম ইকরামুল হক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড