You dont have javascript enabled! Please enable it!

রানাই বকুলতলা গণহত্যা (ডুমুরিয়া, খুলনা)

রানাই বকুলতলা গণহত্যা (ডুমুরিয়া, খুলনা) সংঘটিত হয় ১৮ই মে। এতে ৮ জন গ্রামবাসী নিহত, কয়েকজন মারাত্মকভাবে আহত এবং ৭ জন নিখোঁজ হন।
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া ইউনিয়ন ছিল রাজাকার অধ্যুষিত এলাকা। এ ইউনিয়নের রানাই, আঙ্গরদহ, খর্নিয়া প্রভৃতি গ্রামে রাজাকারদের ব্যাপক প্রভাব ছিল। পার্শ্ববর্তী শোভনা গ্রামেও রাজাকারদের কিছু সহযোগী ছিল। শোভনা পশ্চিমপাড়ার ফকরউদ্দিন সরদার তাদের একজন সহযোগী ছিল। সে শোভনা ও খর্নিয়া গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেককে আশ্বাস দেয় যে, রাজাকারদের কাছে গিয়ে অধীনতা স্বীকার করলে তারা নিরাপদে গ্রামে থাকতে পারবে। এ কথা অনুযায়ী দুই গ্রামের বেশ কয়েকজন রানাই গ্রামের রাজাকারদের সঙ্গে দেখা করতে সম্মত হয়। ১৮ই মে তারা রানাই-এর বকুলতলায় গেলে রাজাকাররা প্রথমে তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং পরে তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। কিছুক্ষণ নির্যাতন করে ৭ জনকে খুলনার গল্লামারী রেডিও সেন্টারে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়। এ ৭ জনের পরিণতি কী হয়েছিল তা জানা যায়নি।
তবে তারা আর কখনো ফিরে আসেনি। আটককৃতদের মধ্যে ৮ জনকে রাজাকাররা বকুলতলায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করে এবং তাদের লাশ পার্শ্ববর্তী নদীতে ফেলে দেয়। রানাই বকুলতলা গণহত্যায় নিহত খর্নিয়ার ৮ জন হলেন- আনু মোল্লা ওরফে আজিজ শেখ, মজিদ বিশ্বাস, সাহেব আলী, শামসুল মোল্লা, ইমাম শেখ, আমজাদ সরদার, আবদুল লতিফ মোড়ল এবং কাওসার শেখ। এদিন নওয়াব আলী তরফদার (পশ্চিমপাড়া, শোভনা), লিয়াকত আলী গাজী (পাঁচপোতা) এবং অন্য একজজন যুবক গুলিবিদ্ধ ও মারাত্মকভাবে আহত হন। রাজাকারদের মধ্যে সামছুর রহমান গাজী (খর্নিয়া), জাহান আলী বিশ্বাস (খর্নিয়া), আবদুল করিম শেখ (খর্নিয়া), রওশন আলী গাজী (গ্রাম রানাই), আবু বক্কর সরদার (রানাই), শাহজাহান আলী সরদার (রানাই), সোহরাব হোসেন সরদার (রানাই) ও নাজের আলী ফকির (রানাই) এ গণহত্যায় জড়িত ছিল। ২০১৭ সালের ২১শে এপ্রিল এদের কয়েকজনকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেফতার করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে তাদের বিচার চলছে। [দিব্যদ্যুতি সরকার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!