রানীরহাট যুদ্ধ (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম)
রানীরহাট যুদ্ধ (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ১২ই সেপ্টেম্বর। চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলাস্থ রানীরহাট ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পাকবাহিনীর দোসর রাজাকার বাহিনী ও স্পেশাল পুলিশ ফোর্সের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের এ-যুদ্ধে ১ জন পুলিশ নিহত হয়। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় সুবেদার মেজর টি এম আলী বাহিনীর ৬০-৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা রানীরহাট যুদ্ধে অংশ নেন। চট্টগ্রাম- রাঙ্গামাটি সড়কের ওপর অবস্থিত রাজানগর বাজারের নিকটস্থ রানীরহাট ব্রিজটি রাজাকার ও স্পেশাল পুলিশ সদস্যরা পাহারা দিত। পাকিস্তানি বাহিনীর চলাচল বাধাগ্রস্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ব্রিজটি যাতে ধ্বংস করতে না পারে, সেজন্য এ পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পাহারা দেয়ার সময় ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলরত কাউকে মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিকামী হিসেবে সন্দেহ হলে তারা তাকে হত্যা করত অথবা হত্যা করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিত। এছাড়াও তারা ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলরত সাধারণ লোকজনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা এবং মূল্যবান সামগ্রী লুট করত। এসব খবর সুবেদার মেজর টি এম আলীর কাছে পৌঁছলে তিনি রাজাকার ও স্পেশাল পুলিশদের ওপর অপারেশন চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী রানীরহাট ব্রিজ এলাকা রেকি করা হয়।
ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা রানীরহাট ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে এম্বুশ করেন। রাত ৮টার দিকে রাজাকার কমান্ডার বাচা মিয়া ও তার নেতৃত্বাধীন রাজাকার এবং কতিপয় স্পেশাল পুলিশ ব্রিজে পাহারা দেয়ার জন্য সেখানে আসতেই মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে তাদের ওপর আক্রমণ করেন। রাজাকাররা পার্শ্ববর্তী ঝোপে আত্মগোপন করে গুলিবর্ষণ শুরু করে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচুর গুলি বিনিময় হয়। ২ ঘণ্টা তুমুল যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের শেল্টারে ফিরে যান। রানীরহাট যুদ্ধে দানু মিয়া (পিতা আমজাদ আলী) নামে শত্রুপক্ষের একজন স্পেশাল পুলিশ নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের ১টি রাইফেল, ১টি বেয়নেট ও কিছু গুলি শত্রুপক্ষের হস্তগত হয়। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড