রাজিহার খ্রিস্টানপাড়া গণহত্যা (আগৈলঝাড়া, বরিশাল)
রাজিহার খ্রিস্টানপাড়া গণহত্যা (আগৈলঝাড়া, বরিশাল) সংঘটিত হয় ১৭ই জুন। এতে ১৫ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
ঘটনার দিন দুপুরে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল গৌরনদী কলেজ ক্যাম্প থেকে চাঁদশী হয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলার রাংতা ইউনিয়নের রাজিহার গ্রামের খ্রিস্টানপাড়া আক্রমণ করে এবং গণহত্যা চালায়। উপজেলা শান্তি কমিটির সভাপতি আফতাব মুন্সীর ভাই জয়নাল মুন্সীর দেখানো পথে তারা এখানে আসে। কোনো খ্রিস্টান পাকিস্তানি বাহিনীর শত্রু নয়, কিংবা খ্রিস্টানদের নির্যাতন করা হবে না এ ধারণার বশবর্তী হয়ে রাজিহার গ্রামের খ্রিস্টানপাড়ার লোকজন পাকিস্তানি বাহিনীর আগমনের খবর পেয়েও আত্মরক্ষার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে যায়নি। হানাদার বাহিনী খ্রিস্টানপাড়ায় অনুপ্রবেশ করে স্যামুয়েল হালদারের স্ত্রী মারিয়ার কাছে বাড়ির পুরুষদের কথা জানতে চায়। পাকিস্তানের শত্রু খ্রিস্টানরা নয় এ সাহসে সকল পুরুষ লোক তাদের সামনে আসে। পাকিস্তানি সেনারা তাদের বাকাল ব্রিজের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে তাদের সকলকে বেঁধে গুলি করে হত্যা করে। পাকিস্তানি বাহিনী ১৭ জনকে গুলি করে। এর মধ্যে মুকুল হালদার (১৩) (পিতা স্যামুয়েল হালদার) এবং সুকুমার হালদার (৪৫) (পিতা রাজেন্দ্র হালদার) গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে যান। খ্রিস্টানপাড়া গণহত্যায় ১৫ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। তারা হলেন— নরেন হালদার (৪৫) (পিতা গৌরীনাথ হালদার), স্যামুয়েল হালদার (৪০) (পিতা গৌরীনাথ হালদার), জয়লাল হালদার (৪২) (পিতা গৌরীনাথ হালদার), পেকু হালদার (৩০) (পিতা নরেন হালদার), টমাস হালদার (২৫) (পিতা নরেন হালদার), অগাস্টিন হালদার (২০) (পিতা নরেন হালদার), দানিয়েল হালদার (২২) (পিতা দেবেন্দ্র হালদার), বিমল হালদার (৪০) (পিতা ভোলানাথ হালদার), জিতেন্দ্র নাথ বকসী (১৯) (পিতা ললিত বকসী), জগদীশ রায় (২০) (পিতা দুঃখীরাম রায়), যোগেশ হালদার (৩৫) (পিতা বেরেশ্বর হালদার, নওপাড়া, বাকাল), যোগেন্দ্রনাথ হালদার (৩০) (পিতা বেরেশ্বর হালদার, নওপাড়া, বাকাল), সুরেন চ্যাটার্জী (৬০) (বাকাল), ননী চ্যাটার্জী (৩৫) ও গোপাল চক্রবর্তী (বাকাল)। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড