You dont have javascript enabled! Please enable it! রাজাকার ভিটা (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা) - সংগ্রামের নোটবুক

রাজাকার ভিটা (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা)

রাজাকার ভিটা (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা) ১৭ জন রাজাকারকে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়ার স্থান হিসেবে পরিচিত। রাজাকার ভিটা জায়গাটি কেরানীগঞ্জ উপজেলার নাজিরপুর-সিরাজনগর লেকের দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে কেরানীগঞ্জ উপজেলার নাজিরপুর গ্রামটি ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ২৬শে মার্চের পর আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু এবং আমানুল্লাহ খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা এলাকাটি নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি এখান থেকে তাঁরা আশে-পাশে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর হামলা পরিচালনা করতেন। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের প্রাক্কালে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার, আলবদর-রা দেশের বিভিন্ন স্থানে দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় মেতে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধারাও সর্বশক্তি দিয়ে তাদের প্রতিহত করেন। ১৭ই ডিসেম্বর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক, আবদুল হালিম, মো. সিদ্দিকুর রহমান, মো. শাহনেওয়াজ আলী, মো. আনিসুর রহমান, আবদুর রব, মো. নাছির খান, এম এ নাইউম, রবীন্দ্রনাথ সরকার, মো. ইসমাইল হোসেন, রুনু প্রমুখ ঢাকার মোহাম্মদপুর-মিরপুর এলাকার ১৭ জন স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারকে ধরে কেরানীগঞ্জের নির্জন এলাকা কলাতিয়ায় নিয়ে আসেন। এলাকাবাসীর সহায়তায় প্রথমে তাদেরকে সাদুল্লাপুরের আম্বিয়া বেগমের পরিত্যক্ত বাড়ি এবং আহাদীপুরের মোবারকের বাড়িতে আটকে রাখেন। ১৮ই ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে নাজিরপুর-সিরাজনগর লেকের পাড়ের নিরিবিলি স্থান শরীফ মিয়ার জমির পাশে শ্মশান ঘাটে নিয়ে যান। সেখানে গ্রামবাসী এবং মুক্তিযোদ্ধারা আগ্নেয়াস্ত্র এবং গণপিটুনি দিয়ে ঐ ১৭ জন রাজাকারকে হত্যা করে। পরেরদিন স্থানীয়রা শরীফ মিয়ার জমিতে গর্ত খুঁড়ে তাদের সবাইকে মাটি চাপা দেয়। স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এ স্থানটি ‘রাজাকার ভিটা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। দূর-দূরান্তের হওয়ায় নিহত ১৭ জন রাজাকারের নাম জানা যায়নি। [ফারহানা আফরিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড