You dont have javascript enabled! Please enable it!

রাঙ্গুনিয়া ফরেস্ট অফিস রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম)

রাঙ্গুনিয়া ফরেস্ট অফিস রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে। চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি এলাকার কমান্ডার হাবিলদার আবু মো. ইসলাম এতে নেতৃত্ব দেন। এ অপারেশনে ৮ জন রাজাকার নিহত এবং তাদের অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
রাঙ্গুনিয়া ফরেস্ট অফিসে রাজাকারদের একটি শক্তিশালী ক্যাম্প ছিল। সুলতান আহমদ কুসুমপুরী বাহিনীর অন্যতম সংগঠক ও বান্দরবান আওয়ামী লীগ-এর সভাপতি মোখলেসুর রহমানের নির্দেশে কমান্ডার হাবিলদার আবু মো. ইসলাম এ ক্যাম্প অপারেশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরদিন রাত ৯টার দিকে তিনি তাঁর গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে জনৈক বাঘা নামক ব্যক্তির (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী) পথনির্দেশনায় রাজাকার ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা রাত ১১টার দিকে সেখানে পৌঁছান। তখন ক্যাম্পে কোনো রাজাকার ছিল না। এ- সময় স্থানীয় একজন ডাক্তার এসে তাঁদের খবর দেন যে, রাজাকাররা রাতে ফরেস্ট অফিসে থাকে না, সকালে পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে হেঁটে এখানে আসে। এ খবরের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধারা ভোররাতে ফরেস্ট অফিস রাজাকার ক্যাম্পে এম্বুশ নেন। সকাল ৭টার দিকে তারা ৮ জন সশস্ত্র রাজাকারকে ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হতে দেখেন। রাজাকাররা ক্যাম্পের নিকটবর্তী হতেই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করেন। রাজাকাররাও তখন আড়ালে অবস্থান নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে ২ ঘণ্টার মতো যুদ্ধ চলে। এক পর্যায়ে রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের কাছ থেকে ৮টি থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল উদ্ধার করেন এবং ৮ জন রাজাকারকে বেঁধে শীলক খালের ডানদিকে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন। এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য মুক্তিযোদ্ধারা হলেন— কমান্ডার হাবিলদার আবু মো. ইসলাম (পিতা হামিদ হোসেন, বরকল, চন্দনাইশ), ডেপুটি কমান্ডার আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইসহাক, উত্তর হাশিমপুর, চন্দনাইশ), সেনাসদস্য নুরুল ইসলাম (পিতা হামিদ হোসেন, বরকল), আইয়ুব আলী (পিতা হামিদ হোসেন, বরকল), দুদু মিয়া (পিতা আবদুর রশিদ, বরকল), এস এম গফুর (পিতা ছৈয়দুল হাকিম, বরকল), মো. আবুল কাশেম (পিতা এনু মিয়া, পশ্চিম পাঠানদণ্ডি, বরকল), আবুল কাশেম (পিতা মফজল আহমদ), মো. ইছহাক মিয়া (পিতা মো. এনু মিয়া, পাঠানদণ্ডি, বরকল), মো. ইছহাক (পিতা আলতাপ মিয়া, উত্তর হাশিমপুর), মো. আবদুল জব্বার (পিতা দুলা মিয়া চৌধুরী, বরকল), আনোয়ারুল হক চৌধুরী (বরকল), মনছফ আলী (পিতা আবদুর রশিদ, বরকল), আবু বকর চৌধুরী (পিতা কবির আহমদ চৌধুরী, বরকল) প্রমুখ। [শামসুল আরেফীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!