You dont have javascript enabled! Please enable it!

রাজদী ব্রিজ যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর)

রাজদী ব্রিজ যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর) সংঘটিত হয় ১৬ই নভেম্বর। কালকিনি থানার পুলিশ ও মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের এ-যুদ্ধে থানার ওসি-সহ ১০ জন পুলিশ ও মিলিশিয়া আহত হয়।
জাইলার চর যুদ্ধ-এর পর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মাদারীপুর ← মুসলিম লীগ নেতা ও শান্তি কমিটির সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর উকিল (আলীনগর)-কে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা কালকিনি থানা কমান্ডার এম এ রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল নিয়ে বর্তমান কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে ভুরঘাটার আগে রাজদী ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তার উত্তর পাশে সকাল ১০টায় এম্বুশ করেন। এ অপারেশনে এম এ রহমানের নেতৃত্বে সামসুদ্দিন, মহম্মদ আলী, আবদুল মালেক, ফরিদ আহমেদ মন্টু, নুরুল ইসলাম-সহ ৫০-৬০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। মুক্তিযোদ্ধারা এম্বুশ করার কিছুক্ষণ পর জাহাঙ্গীর উকিল ৪০ জন পাকিস্তানি পুলিশ- মিলিশিয়া ও রাজাকার বেষ্টিত হয়ে মাদারীপুর শহর থেকে রেশন ও বেতন তোলার উদ্দেশ্যে কালকিনি থানা ভবন থেকে বেরিয়ে আসে। তখন কালকিনি-ভুরঘাটা রাস্তায় কোনো যানবাহন চলত না। শত্রুরা হেঁটে অগ্রসর হচ্ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের মূল লক্ষ ছিল জাহাঙ্গীর উকিল। এম এ রহমান প্রথম গুলিবর্ষণ করেন। গুলিতে থানার ওসি মোজাম্মেললের মাথার হেলমেট উড়ে যায় এবং সে আহত হয়। পুলিশ ও মিলিশিয়ারা পাল্টা-আক্রমণ করলে দুপক্ষের মধ্যে আড়াই ঘণ্টা গুলি বিনিময় হয়। যুদ্ধে শত্রুসেনাদের অন্তত ১০ জন আহত হয়। মাদারীপুর যেতে না পেরে পুলিশ, মিলিশিয়া ও রাজাকাররা কালকিনি থানায় ফিরে আসে। প্রকাশ্য দিনের আলোয় সকাল ১০টায় অভিযান পরিচালিত হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বেশিক্ষণ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। মুক্তিযোদ্ধারা এম্বুশ তুলে শ্যাওলাপট্টি ক্যাম্পে ফিরে যান। তবে শান্তি কমিটির নেতার ওপর এ-রকম আক্রমণ পরিচালনা করায় মুক্তিযোদ্ধাদের ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের স্থানীয় লোকজনের মনোবল বৃদ্ধি পায়। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!