মুক্তিযুদ্ধে রাউজান উপজেলা (চট্টগ্রাম)
রাউজান উপজেলা (চট্টগ্রাম) ১৯৭০ সালের নির্বাচনের রায় অনুযায়ী পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে দেশের শাসনক্ষমতা হস্তান্তর না করে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে। এর ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দেয়। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাউজানের জনগণেরও তা বুঝতে বাকি থাকে না।
১৯৭১ সালের মধ্যমার্চ থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে বিহারি-বাঙালি সংঘাত, চট্টগ্রাম বন্দরে সোয়াত জাহাজ থেকে পাকসেনাদের বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র খালাসের চেষ্টা, বাঙালি প্রতিরোধকারীদের সঙ্গে পাকসেনাদের খণ্ডযুদ্ধ এবং চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে ব্যাপক সৈন্য সমাবেশের সংবাদ জেনে রাউজানে মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এই দুই পরিষদের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিসেনা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া খিরাম, শান্তিরহাট, তোকিরহাট, নোয়াজিশপুর, ডাবুয়া, আবুরখীল প্রভৃতি স্থানে একাধিক সহায়ক কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়।
রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ ও অন্যান্য সহায়ক কার্যক্রমে শেখ শামসুদ্দিন (উরকিরচর), ফরিদ আহাম্মদ (আধারমানিক), আবদুল মালেক কন্ট্রাক্টর (চিকদাইর), ডা. ফজল আহাম্মদ (চিকদাইর), মুছা মিয়া (কদলপুর), আব্দুল বারিক মেম্বার (কদলপুর), শিল্পী সোলাইমান (সুলতানপুর), মাস্টার নুরুল আলম চৌধুরী (সুলতানপুর), ডা. আবু জাফর (লেলেঙ্গারা), নাজমুল হুদা চৌধুরী (মোহাম্মদপুর), আমিন শরীফ মনুবলী (দক্ষিণ সত্তা), আনোয়ার আজিম চৌধুরী (খলিফার বাড়ী, নোয়াজেশপুর), কাজী আব্দুল খালেক (নোয়াজেশপুর), মোহাম্মদ ইদ্রিস চৌধুরী (নোয়াজেশপুর), কামাল ছাত্তার (নোয়াপাড়া) প্রমুখ বিশেষভাবে তৎপর ছিলেন। পরবর্তীকালে এঁরাই মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে রাউজান থানা কমান্ডার ছিলেন মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন চৌধুরী (ইয়াসিননগর)। বিএলএফ- কমান্ডার ছিলেন নাজিম উদ্দিন খান (মোবারকখীল), ডেপুটি কমান্ডার শওকত হাফিজ খান রুশ্মি (বিনাজুরী) এবং সহকারী কমান্ডার ছিলেন তোফায়েল আহমেদ (ছিটিয়াপাড়া)। এফএফ- বাহিনীর ফটিকছড়ি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারী থানার অপারেশন কমান্ডার ছিলেন আবু মোহাম্মদ হাশেম।
২৫শে মার্চ রাতে পাকবাহিনীর বাঙালি নিধন শুরু হলে উপজেলা সদরের বাসিন্দারা প্রাণভয়ে শহর ছাড়তে শুরু করে। এদিকে রাউজানের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে কালুরঘাটের মোহরায় ইপিআর ক্যাপ্টেন রফিকের নেতৃত্বে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হয়। সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, সহায়ক কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবক দলগুলো এর সঙ্গে যুক্ত হয়।
১৩ই এপ্রিল সকালে প্রায় ২০০ পাকসেনা ভারী অস্ত্র নিয়ে রাউজান উপজেলায় প্রবেশ করে এবং নোয়াপাড়ার মদুনাঘাট হয়ে শহরে পৌঁছে রাউজান কলেজ, নোয়াপাড়া ইমাম গাজ্জালী কলেজ এবং মদুনাঘাট পাওয়ার স্টেশনে ক্যাম্প স্থাপন করে। এর কয়েক দিন পরেই স্বাধীনতাবিরোধীরা থানা শান্তি কমিটি গঠন, করে। এর সভাপতি ছিল কদলপুরের এমদাদ হোসেন চৌধুরী (পরে দলিলাবাদের আব্দুল অদুদ সওদাগর), সহ-সভাপতি রাউজান হাইস্কুলের শিক্ষক ডাবুয়ার আবুল বাশার বিএসসি এবং সম্পাদক সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ প্রতীক: হোসেন। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এর সদস্য করা হয়। থানা শান্তি কমিটির অনুরূপ প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে সভাপতি ও মেম্বারদের সদস্য করে ইউনিয়ন শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। এভাবে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত শান্তি কমিটির পরিধি বিস্তৃত করা হয়।
এপ্রিলের শেষদিকে স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতাদের সহায়তায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। হলদিয়া, রাউজান কলেজ, গহিরা হাইস্কুল, কাগতিয়া মাদ্রাসা, নোয়াপাড়া ইমাম গাজ্জালী কলেজ, মদুনাঘাট পাওয়ার স্টেশন, মগদাই বাজার ও লাম্বুর হাটে রাজাকারদের ক্যাম্প স্থাপিত হয়। অগ্নিসংযোগ, নারীনির্যাতন, লুণ্ঠন ইত্যাদি ছিল রাজাকারদের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। রাউজান কলেজের সম্মুখস্থ দিদার মঞ্জিলের মালিক জেবল হোসেন, স্থানীয় খোরশেদ আলম খুইশ্যা, এমদাদ মেম্বার, লেলেঙ্গারার ফজল করিম মাস্টার, ছিটিয়াপাড়ার মোহাম্মদ মুছলেম, বেরুলিয়ার মুছলেম কোম্পানি, মোহাম্মদপুরের এমদাদ কোম্পানি, আরিফ বিল্লাল এবং রাজাকার কমান্ডার দোস্ত মোহাম্মদ বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন চালায়।
পাকবাহিনী ১৩ই এপ্রিল রাউজানে প্রবেশ করে ১৩টি স্থানে হত্যাকাণ্ড চালায়। এতে মোট ১৬৯ জন লোক নিহত হন। এর মধ্যে মধ্যগহিরা শীলাপাড়া গণহত্যায় ১০-১২জন, বড়পোল পালিতপাড়া গণহত্যা য় ৮ জন, বনিকপাড়া গণহত্যায় ১১ জন, জগত্মল্ল পাড়া গণহত্যায় ৩৬ জন, ছিটিয়াপাড়া সুলতানপুর গণহত্যায় ৯ জন, ঊনসত্তর পাড়া গণহত্যায় ৬৮ জন বাড়ুইপাড়া গণহত্যায় ৪ জন এবং নোয়াপাড়া গণহত্যায় ১২ জন নিহত হন। বাকিরা মধ্যগহিরা শীলপাড়া, গহিরা বিশ্বাসবাড়ি, বাড়ইপাড়া, রাউজান পালিতপাড়া ও পাহাড়তলীতে নিহত হন। এছাড়া ১০ই ডিসেম্বর পাকবাহিনী হলদিয়া গ্রামে ঢুকে ১২ জনকে হত্যা করে, যা হলদিয়া গণহত্যা নামে পরিচিত। সব মিলিয়ে রাউজান উপজেলায় পাকসেনারা ১৮১ জন এবং রাজাকাররা ৩ জন মোট ১৮৪ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট সমাজসেবী নূতন চন্দ্র সিংহ-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
২৪শে এপ্রিল ১২-১৩ জন পাকিস্তানি মিলিশিয়া স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পূর্বগহিরা গ্রামে প্রবেশ করে বৈদ্যবাড়ি ও চৌধুরীবাড়ির লোকজনদের ওপর অত্যাচার চালায় এবং খুইল্যার বাড়িতে ৭ জন নারীকে ধর্ষণ করে। এছাড়া তারা সংখ্যালঘুদের অনেক ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। রাউজান থানার গহিরার ফজলুল কাদের চৌধুরী এবং তার পুত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (যুদ্ধাপরাধের বিচারে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয় এবং বিগত ২২শে নভেম্বর ২০১৫ তারিখ রাত ০০.৫৫ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়) ছিল মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয়। ফজলুল কাদের চৌধুরী ১৯৬৪ সালে মৌলিক গণতন্ত্রীদের ভোটে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এমএনএ নির্বাচিত হয়ে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার হয়। ১৯৭০-এর নির্বাচনে সে রাউজান এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের নিকট পরাজিত হয়। সে ও তার পুত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী রাউজানের সংখ্যালঘুরা নির্বাচনে তাদের পক্ষে ভোট দেয়নি এ-কথা বলে পাকসেনা, নিজস্ব বাহিনী ও রাজাকারদের সহায়তায় সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও নির্যাতন চালায়। এ-সময় রাউজানের অনেক সংখ্যালঘু পরিবার উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে চলে যায়। রাজাকার কমান্ডার দোস্ত মোহাম্মদ, গহিরার গুন্নু মিয়া সারাং, কাগতিয়ার টিক্কা খান এবং রাউজানের খুরশিদ ওরফে খুইশ্যা ফজলুল কাদের চৌধুরীর প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করত।
রাউজানের প্রতিটি রাজাকার ক্যাম্পেই পাকসেনা ও মিলিশিয়াদের সহায়তায় নিরীহ লোকজনদের ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। গহিরা ক্যাম্পটি ছিল ফজলুল কাদের চৌধুরীর বাড়িসংলগ্ন। এ ক্যাম্পে অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা ছিল সবচেয়ে বেশি। এখানে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট গবেষক আব্দুল হক চৌধুরী ও তাঁর দুই পুত্র, আব্দুল গণি সওদাগর, আইয়ুব আলী সওদাগর এবং আবু জাফরসহ অসংখ্য স্বাধীনতাকামী মানুষকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এছাড়া ফজলুল কাদের চৌধুরীর চট্টগ্রাম শহরস্থ গুডস হিল ভবনে রাউজানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনদের ধরে এনে নির্যাতন, হত্যা ও নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হতো, যা গুডস হিল নির্যাতনকেন্দ্র নামে পরিচিত।
পাকিস্তান নৌবাহিনীর ছুটিতে আসা করপোরাল আব্দুল করিম পুলিশ, ইপিআর এবং আনসার বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও পালিয়ে আসা ২৫-৩০ জন সদস্য নিয়ে একটি মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। এ বাহিনী করিম বাহিনী নামে পরিচিত ছিল। রাউজান, বোয়ালখালীসহ অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বাহিনী বিশেষ অবদান রাখে। রাউজান উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নোয়াপাড়া ইমাম গাজ্জালী কলেজ যুদ্ধ, মদুনাঘাট পাওয়ার স্টেশন ক্যাম্প অপারেশন, ময়নারটেক অপারেশন, লাম্বুরহাট রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন, কদলপুর রজমান আলী হাট অপারেশন-, গহিরা হাইস্কুল রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন, বেরুলিয়া ব্রিজ অপারেশন আমিরহাট রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন, কাগাতিয়া মাদ্রাসা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন — হলদিয়া-আমিরহাট যুদ্ধ কচুপাড়া ক্যাম্প যুদ্ধ- ইত্যাদি। ১৩ই এপ্রিল সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে সংঘটিত নোয়াপাড়া ইমাম গাজ্জালী কলেজ যুদ্ধে ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৩রা অক্টোবর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালিত মদুনাঘাট পাওয়ার স্টেশন ক্যাম্প অপারেশনে উভয় পক্ষে অনেকে হতাহত হয়। ডিসেম্বরের প্রথমদিকে এখানে আরেকটি যুদ্ধ হয় এবং তাতে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১০ই ডিসেম্বর হলদিয়া-আমিরহাট যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পঙ্কজ বড়ুয়া, সামসুল আলম এবং আব্দুল মান্নান শহীদ হন। একই দিন কচুপাড়া ক্যাম্প যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়। ১২ই ডিসেম্বর কচুপাড়ায় আরেকটি যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধেও কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয় এবং বাকিরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ১৬ই ডিসেম্বর রাউজান উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হলেন- আবুল বাসার, বীর প্রতীক (পিতা সৈয়দ হোসেন, শেখপাড়া)।
রাউজান উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন— আবুল বাসার, বীর প্রতীক (১৪ই জুলাই বেলাবো যুদ্ধে শহীদ)। এস এম এ মন্নান (পিতা এস এম এ জলীল, উত্তর সত্তা), আবু জাফর চৌধুরী (পিতা সুলতান আহাম্মদ চৌধুরী, ডাবুয়া), নাজিম উদ্দীন (পিতা নবাব মিয়া চৌধুরী, মোবারকখীল), মোহাম্মদ মুছা (পিতা ফোরক আহাম্মদ, মোহাম্মদপুর), বিকাশ বরণ বড়ুয়া (পিতা দেনে কুমার বড়ুয়া, খৈয়াখালী; পুলিশ সদস্য), পঙ্কজ কুমার বড়ুয়া (পিতা সুরেন্দ্র লাল বড়ুয়া, হিঙ্গলা), সামসুল আলম (পিতা বদিউল আলম চৌধুরী), আবদুল মান্নান (দাউদকান্দি; চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সদস্য), আবদুল হাদী (পিতা বসু মিয়া, ইয়াসিননগর; সেনাসদস্য), হাবিলদার বাদশা মিয়া (পিতা আলী মিয়া, কদলপুর), ক্যাপ্টেন আব্দুল করিম (পিতা আমজাদ আলী, শেখপাড়া; নৌবাহিনীর করপোরাল), আবুল কাশেম (পিতা আমজাদ আলী, পশ্চিম রাউজান; সেনাসদস্য), সুবেদার রুহুল আমিন (পিতা ফজল করিম, সুলতানপুর; পুলিশ সদস্য), হাবিলদার নুরুল আমিন (পিতা কালা মিয়া, আধারমানিক), শফিকুল আলম (পিতা মোহাম্মদ মুছা, সুলতানপুর), রফিক আহমেদ চৌধুরী (পিতা হাজী আবদুল গনি চৌধুরী, ওয়াহেদেরখীল), সুনীল কান্তি ঘোষ (পিতা সতীশ চন্দ্র ঘোষ, আধারমানিক), সুধীর বড়ুয়া (পিতা নীরেন্দ্র লাল বড়ুয়া, আবুরখীল), সুবেদার আবুল বশর (পিতা সৈয়দ হোসেন, শেখপাড়া), অমল কান্তি দে (পিতা ভোলানাথ দে, কোয়েপাড়া), শওকত আলী চৌধুরী (পিতা নুরুল আবছার চৌধুরী, কোয়েপাড়া), এজাহার মিয়া (পিতা হামজু মিয়া, কোয়েপাড়া), মোহাম্মদ ফরিদ আহমেদ (পিতা মতিয়র রহমান, পাঁচখাইন), মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ (পিতা আবু মিয়া তালুকদার, পাঁচখাইন), নায়েক ফরিদুল আজিজ (আধারমানিক) এবং মোহাম্মদ হোসেন (পিতা আহমদুর রহমান সওদাগর, ইয়াসিননগর)।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে রাউজান উপজেলা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে একটি শহীদ মিনার, রাউজান মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিস প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ এবং কুণ্ডেশ্বরী ভবন প্রাঙ্গণে নূতন চন্দ্ৰ সিংহ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। এছাড়া জগত্মল্ল পাড়া গণহত্যা এবং উনসত্তর পাড়া গণহত্যার স্থলে নির্মিত হয়েছে দুটি স্মৃতিস্তম্ভ। [আহমেদ আমিন চৌধুরী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড