বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাংবাদিক ও আলোকচিত্রী রবীন সেনগুপ্ত
রবীন সেনগুপ্ত (জন্ম ১৯৩০) ভারতের সাংবাদিক ও আলোকচিত্রী। তিনি ১৯৩০ সালের ২০শে ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম প্রফুল্লচন্দ্র সেনগুপ্ত ও মাতার নাম শান্তি প্রভা সেনগুপ্ত। তিনি উমাকান্ত একাডেমি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য শাখায় অধ্যয়ন করেন। ১৯৫২ সাল থেকে ফ্রিল্যান্স চিত্রসাংবাদিক হিসেবে তিনি দেশ-বিদেশের বহু প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য লাভ করেন৷ তিনি ত্রিপুরার আদিবাসীদের সংস্কৃতি ও জীবন নিয়ে প্রথম রঙিন তথ্যচলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্ব আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম শ্রেণির আলোকচিত্রীরূপে স্বীকৃতি লাভ করেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের প্রথম প্রহর থেকেই রবীন সেনগুপ্ত মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বিভিন্ন শরণার্থী শিবির- এবং সীমান্তবর্তী প্রশিক্ষণ শিবির পরিদর্শন করেন। তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গী হয়ে মুক্তাঞ্চল ও যুদ্ধের ময়দানে ছুটে গিয়েছেন। তিনি একজন চিত্রসাংবাদিক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস রণাঙ্গনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস অত্যাচার এবং মুক্তিবাহিনীর সাফল্যের ঐতিহাসিক ছবি ও রণাঙ্গনের বিভিন্ন ছবি ক্যামেরাবন্দি করে বিভিন্ন খবরের কাগজে প্রকাশ করেন এবং এর মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান রাখেন। ২০০০ সালে তাঁর তোলা ছবি নিয়ে চিত্রসাংবাদিকের ক্যামেরায় মুক্তিযুদ্ধ নামক সচিত্র গ্রন্থটি ঢাকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর তোলা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবিগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসের সচিত্র তথ্যভাণ্ডার। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রবীন সেনগুপ্ত-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড