You dont have javascript enabled! Please enable it!

রফিয়াদি গণহত্যা (বাবুগঞ্জ, বরিশাল)

রফিয়াদি গণহত্যা (বাবুগঞ্জ, বরিশাল) সংঘটিত হয় ২১শে জুন। এতে কয়েকজন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ হন। বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের পূর্বদিকে আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরবর্তী গ্রাম রফিয়াদি। ২১শে জুন সকাল ১০টার দিকে বাবুগঞ্জ হাইস্কুল ক্যাম্প থেকে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য স্থানীয় ছাদের চৌকিদারকে সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেঁটে সিংহেরকাঠী গ্রামে প্রবেশ করে। ছাদের চৌকিদার ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রামের এলোমেলো রাস্তায় ঘুরিয়ে তাদের নিয়ে আসে যেন লোকজন পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। তারা সিংহেরকাঠী গ্রামের হিন্দুপাড়ায় প্রবেশ করে রাখাল হালদার, আশুতোষ রায়, হীরালাল রায়, মতিলাল করাতি, ললিত করাতির বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পার্শ্ববর্তী রফিয়াদি গ্রামের যতীন্দ্রনাথ কয়াল (৬৮)। পাকিস্তানি বাহিনীর আসার খবর পেয়ে হিন্দুপাড়ার সবাই বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। দেবু বেপারী (রফিয়াদি) নামে এক যুবককে ধরে মারধর করলে তিনি পাকিস্তানি সৈন্যদের কলেমা শুনিয়ে বেঁচে যান। রফিয়াদি গ্রামের কয়েকজন দিনমজুর সিংহেরকাঠী গ্রামে ধানক্ষেতে কাজ করছিল। পাকিস্তানি সেনারা তাদের ধরে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। নদীর পাড়ে একজন নৌকার মাঝি এ দৃশ্য দেখে দৌড় দিলে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাকে ধানক্ষেতের মধ্যে গুলি করে হত্যা করে। রফিয়াদি গ্রাম গণহত্যায় কয়েকজন নিরীহ মানুষ শহীদ হন, যার মধ্যে ৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন— রফিয়াদি গ্রামের কাসেম ফকির (৩৫) (পিতা ফকরুদ্দিন ফকির), মন্নান বয়াতী (৪৫) (পিতা মৌজে আলী বয়াতী), সুলতান বয়াতী (৪০) (পিতা শফিক উদ্দীন বয়াতী) ও আবদুল খালেক (৪০) (পিতা নাজেম আলী, ওলানকাঠী, রহমতপুর)। গণহত্যার স্থান নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!