You dont have javascript enabled! Please enable it!

রংপুর টাউন হল নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমি (রংপুর সদর)

রংপুর টাউন হল নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমি (রংপুর সদর) মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুরের ঐতিহ্যবাহী টাউন হলকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমি হিসেবে ব্যবহার করে। টাউন হলের অভ্যন্তরে নারীদের বন্দি করে রাখা হতো। তারা রংপুর টাউন হল এবং এর ক্যাম্পাসে থাকা রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদ ভবন ও রঙ্গপুর পাবলিক লাইব্রেরির পাঠকক্ষ টর্চার সেলকেও বাঙালি হত্যার কেন্দ্রে পরিণত করে। রংপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে আনা বাঙালিদের নির্যাতন ও হত্যার পাশাপাশি এটি নারী নির্যাতন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখানে নির্যাতিত এক বীরাঙ্গনার নাম মনসুরা বেগম (তকেয়ার পার)। ১৬ই ডিসেম্বরের পর এখান থেকে ৫০ জনের মতো নির্যাতিত নারীকে উদ্ধার করা হয়। টাউন হলের পেছনে একটা বাগানের মধ্যে লেপ, কাঁথা, বালিশ ইত্যাদি পাওয়া যায়। নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতনকালে সেগুলো পাকিস্তানি হানাদার পশুরা ব্যবহার করত। যেসব নারীরা অক্ষম হয়ে পড়ত, তাদেরকে বেয়নেট দিয়ে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী গর্তের মধ্যে ফেলে দিত। তাদের লাশ কুকুর, শেয়ালে খেত। গর্তে অসংখ্য নারীকে হত্যা করে ফেলা হয়। পরবর্তীতে এ গর্তের মধ্যে তাদের মাথার চুল, শাড়ি, সালোয়ার, কামিজ, মাথার খুলি পাওয়া গেছে। মডার্ন হল (টাউন হল) ছিল উচ্চপদস্থ পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প। সেখানে নারীদের ব্যবহৃত কয়েক ঝুড়ি ভাঙ্গা কাচের চুড়ি পাওয়া গেছে। মডার্ন হল (টাউন হল)-এর দেয়াল ঘেঁষা ইন্দারার পাশের গাছটি আজো পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম হত্যার সাক্ষী হয়ে আছে।
এখানে নির্যাতন ও হত্যা করে উত্তর পাশের জঙ্গলে অনেক লাশ ফেলে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, রংপুর ‘একাত্তরের বধ্যভূমি’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করেছে। [গীতিময় রায়]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!