You dont have javascript enabled! Please enable it! রইস্যার মা-র ঘাট বধ্যভূমি (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম) - সংগ্রামের নোটবুক

রইস্যার মা-র ঘাট বধ্যভূমি (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম)

রইস্যার মা-র ঘাট বধ্যভূমি (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম) চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে বহু সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়।
উপজেলা সদর থেকে খুব কাছে রাইখালী খালের ওপর একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। এখানেই রইস্যার মা-র ঘাট। চট্টগ্রাম শহর থেকে লোকজন এপথে যাতায়াত করত।
গোমদণ্ডী সিও অফিস (বর্তমান উপজলা সদর) পাকিস্তানি সৈন্য, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির প্রধান কেন্দ্র ছিল। সিও-র বাসা ছিল প্রধান কার্যালয়। প্রতিদিন সকালবেলা রাজাকাররা গোমদণ্ডী হেডকোয়ার্টার্সে এসে তাদের দায়িত্ব বুঝে নিত। দায়িত্বের মধ্যে ছিল গ্রামে আগুন জ্বালানো, গ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের ধরে আনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে রাজাকাররা সাধারণ লোকজনকে গোমদণ্ডী হেডকোয়ার্টার্সে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে আসত। তারা তাদের ফ্যানের সাথে বেঁধে, ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থলের খবর নেয়ার চেষ্টা করত। তাদের কাউকে-কাউকে আবার অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিত। সারাদিন অমানুষিক নির্যাতন করার পর ধৃতদের রইস্যার মা-র ঘাটে নিয়ে গুলি করে খালে ফেলে দিত। যুবক থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ এদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। প্রতিদিন ২০-৩০ জন মানুষ হত্যা না করলে রাজাকাররা পাকিস্তানি সৈন্যদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করতে পারত না। রাজাকাররা মাঝে- মধ্যে এ ঘাট দিয়ে আসা লোকজনকে ধরে সেখানেই হত্যা করত। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে এ ঘাটে অগণিত মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড় পাওয়া যায়। [উদয়ন নাগ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড