You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মিশরের অধ্যাপক, লেখক ও রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ রিফাত আল-সাঈদ

মোহাম্মদ রিফাত আল-সাঈদ (১৯৩২-২০১৭ ) মিশরের অধ্যাপক, লেখক ও রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৩২ সালের ১১ই অক্টোবর মিশরের কায়রোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রোর আইন শামস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তাছাড়াও আধুনিক ইতিহাসে তিনি দুটি ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটিতে খণ্ডকালীন অধ্যাপনা করতেন। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকে তিনি ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট ফর ন্যাশনাল লিবারেশন (হাদিতু)-এ সক্রিয় ছিলেন। কমিউনিস্ট কর্মকাণ্ড দমন অভিযানে ১৯৫৮ সালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তরের দশকে তাঁকে বারংবার কারাবরণ করতে হয়।
মোহাম্মদ রিফাত আল-সাঈদ ন্যাশনাল প্রোগ্রেসিভ ইউনিয়নিস্ট পার্টির (তাগাম্মু) প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তাগাম্মু পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ২০০৫-২০১৩ সময়ে পার্টির নেতা নির্বাচিত হন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হোসনি মোবারক কর্তৃক ১৯৯৫ সালে তিনি শুরা কাউন্সিলের এমপি নিযুক্ত হন। তিনি তাগাম্মু পার্টির মুখপত্র আল-আহালি পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন। তাছাড়াও তিনি মিশরে ইসলামপন্থী ও কমিউনিস্ট আন্দোলনবিষয়ক বেশ কয়েকটি পুস্তক রচনা করেন। তিনি ২০১৭ সালের ১৭ই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে মিশর শান্তি পরিষদের সক্রিয় সদস্য ও বিশ্বশান্তি পরিষদের কো-অর্ডিনেটিং সেক্রেটারি জেনারেল ড. মোহাম্মদ রিফাত আল-সাঈদ ও তাঁর সংগঠন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে
দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন। মিশর সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তাঁদের সংগঠন বাংলাদেশের নির্যাতিত জনগণের পক্ষে বিবৃতি প্রদান, সভা- সমিতির আয়োজন এবং হাজার-হাজার মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তা মানবাধিকার কমিশনের কাছে হস্তান্তর করে। সে-কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বিশ্বশান্তি পরিষদের কো-অর্ডিনেটিং সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর মুক্তির দাবিতে বিশ্ব জনমত সংগঠিত করতে ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১লা অক্টোবর ২০১৩ ড. মোহাম্মদ রিফাত আল- সাঈদ-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!