বীর প্রতীক মোহাম্মদ জাকির হোসেন
মোহাম্মদ জাকির হোসেন, বীর প্রতীক (শহীদ ১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ঢাকা মহানগরের রামকৃষ্ণ মিশন রোডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল করিম এবং মাতার নাম পরীবানু। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।
মোহাম্মদ জাকির হোসেন ৭১- এ পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত ইসলামিয়া কলেজে বিএসসি-র ছাত্র ছিলেন। ৩রা মার্চ পাকিস্তান থেকে ঢাকায় ফিরে ২৫শে মার্চ নিরীহ-নিরস্ত্র মানুষের অসহায় অবস্থা দেখে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ভারতের সীমান্ত পথে আগরতলার মেলাঘর ক্যাম্পে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর দেশে ফিরে তিনি কয়েকটি গেরিলা অপারেশনে অংশ নেন। তিনি ছিলেন একটি গ্রুপের দলনেতা।
২৬শে আগস্ট তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা স্টুডেন্ট গ্রুপের হয়ে যুদ্ধ করেন। এ গ্রুপ দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে এবং দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে পাকহানাদারদের আক্রমণ করে। এ যুদ্ধে হানাদাররা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে জাকির হোসেনের সহযোদ্ধা মোস্তাক আহত হন। এরপর জাকির হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। পরে সহযোদ্ধারা জাকির হোসেনের লাশ উদ্ধার করে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের কাছে রঘুরামপুর গ্রামে এক টিলায় সমাহিত করেন। তাঁর সমাধিটি কোল্লাপাথর সমাধি হিসেবে পরিচিত (দ্রষ্টব্য কোল্লাপাথর শহীদ স্মৃতিসৌধ)।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে বাংলাদেশ সরকার ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। রাজধানী ঢাকার ইত্তেফাক মোড় থেকে মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার শাপলা চত্বর হয়ে কালভার্ট পর্যন্ত সড়কের নাম তাঁর নামে “শহীদ জাকির হোসেন সড়ক’ করা হয়েছে। [জেবউননেছা]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড