You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মোহম্মদ মকবুল হোসেন - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মোহম্মদ মকবুল হোসেন

মোহম্মদ মকবুল হোসেন, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪১) নায়েক সুবেদার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪১ সালের ১লা এপ্রিল কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার সাহেবাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল আজিজ ও মাতার নাম আমেনা খাতুন।
মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে মার্চের অসহযোগ আন্দোলন, সাতই মার্চের ভাষণ-এ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার আহ্বান
ইত্যাদি তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানে উদ্দীপ্ত করে। তখন তিনি যশোর সেনানিবাসে কর্মরত। সেনানিবাসে পাকসেনাদের দ্বারা অতর্কিতে আক্রান্ত হয়ে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে মেজর মঈনুল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে কামালপুর যুদ্ধে অংশ নেন। ৩০-৩১শে জুলাই দুদিনব্যাপী এখানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকসেনাদের তীব্র প্রতিরোধ উপেক্ষা করে মুক্তিসেনারা তাদের বাঙ্কার অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকে পড়েন। অনেক পাকসেনা হতাহত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন শহীদ হন। তাঁর মৃতদেহ যাঁরা সরিয়ে আনতে চেষ্টা করেন তাঁরাও শহীদ হন। এ যুদ্ধে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেন। ২ জন অফিসারসহ ৬৬ জন মুক্তিসেনা আহত হন। সুবেদার মকবুল হোসেনও মারাত্মভাবে আহত হন এ যুদ্ধের বড় সাফল্য, পাকহানাদার বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে পড়ে এবং তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। অক্টোবর মাসের প্রথমার্ধে মুক্তিসেনারা কোদালকাঠিতে পাকসেনাদের ঘাঁটি আক্রমণ করেন। মূল আক্রমণে অংশগ্রহণকারী ৪টি দলের একটিতে ছিলেন সুবেদার মকবুল হোসেন। ব্যাপক গোলাবর্ষণের সমর্থন নিয়ে পাকসেনারা মুক্তিসেনাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১ম ইস্ট বেঙ্গলের মেজর জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিসেনারা পাল্টা আক্রমণ গড়ে তোলেন। সীমিত অস্ত্র ও জনবল সত্ত্বেও দৃঢ় মনোবল ও ইচ্ছাশক্তির ফলে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকেন। ফলে সন্ধ্যার পর পাকসেনারা তাদের মৃত সেনাসদস্যদের নিয়ে অন্য ঘাঁটিতে পালিয়ে যায়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নায়েক সুবেদার মোহম্মদ মকবুল হোসেন-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৪ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম রোকেয়া বেগম।. [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড