You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ

মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৫) হাবিলদার, ১১নং সেক্টরের নেত্রকোনা- কিশোরগঞ্জ সাব- সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মেডিকেল কোরের চিকিৎসক ১৯৩৫ সালের ১৩ই মে তিনি নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছমির উদ্দিন মাস্টার এবং মাতার নাম
নেহারেজেন্নেছা খাতুন। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে হাবিলদার পদে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। ৭১-এর মার্চ মাসে তাঁর পোস্টিং ছিল ঢাকা সেনানিবাসের মেডিকেল কোরে। মার্চের গণআন্দোলন, ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ, ২৫শে মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা শুরু ইত্যাদি ঘটনা তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। ৩১শে মার্চ ঢাকা সেনানিবাস থেকে পালিয়ে তিনি ময়মনসিংহের পথে যাত্রা করেন। দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে অবশেষে নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী মহেশখোলা দিয়ে ৯ই মে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি ১১নং সেক্টরের হেডকোয়ার্টার্স তুরায় যান। কিছুদিন পর একদল মুক্তিযোদ্ধাসহ মহেশখোলা দিয়ে তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তাঁর সাব- সেক্টর কমান্ডার ছিলেন আব্দুল হামিদ। হাবিলদার মোসলেহ উদ্দিন নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে পাকহানাদারদের বিরুদ্ধে একাধিক যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। একই সঙ্গে তিনি মেডিকেল অফিসার হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ২০শে নভেম্বর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকহানাদারদের দখল থেকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা মুক্ত করতে তিনি বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সেখানে একটি প্লাটুনের নেতৃত্বে ছিলেন। এছাড়াও তিনি নেত্রকোনা জেলার মদন, মোহনগঞ্জ ও জয়শ্রী এলাকায় পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি শত্রুর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে বীরত্ব প্রদর্শন এবং যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দানের ক্ষেত্রে মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ অনন্য ভূমিকা পালন করেন। তাঁর এ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মালিহা আহমেদ। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড