You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক মো. হারিছ মিয়া

মো. হারিছ মিয়া, বীর প্রতীক (১৯২৫-২০০৮) সুবেদার মেজর ও মুক্তিযুদ্ধের একজন নির্ভীক সৈনিক। তিনি ১৯২৫ সালের ৩১শে ডিসেম্বর রংপুর জেলার অন্তর্গত বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আহম্মদ হোসেন এবং মাতার নাম মফিজোন্নেসা। মো. হারিছ মিয়া ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের মধ্য দিয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তিনি পাকিস্তানের নিয়মিত সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি ১৯৭১ সালে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সুবেদার মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হলে ব্যাটালিয়নের নিয়মিত বাঙালি সৈনিকদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ৩০শে মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সংকট সৃষ্টি হলে তিনি ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নেন। এ-সময় মেজর শাফায়াত জামিল, বীর বিক্রম ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডার নিয়োজিত হন এবং তাঁর নেতৃত্বে হারিছ মিয়া পাকবাহিনীর ওপর গেরিলা হামলা, রেইড ও এম্বুশ পরিচালনা করতে থাকেন। পরবর্তীতে তেলঢালায় এ রেজিমেন্ট স্থানান্তর করা হলে উচ্চ সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁকে ‘জেড’ ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তিনি ‘জেড’ ফোর্সে সুবেদার মেজর হিসেবে বিভিন্ন যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখেন। সিলেট জেলার তামাবিল এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর এক সম্মুখ যুদ্ধে তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মো. হারিছ মিয়াকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ২ কন্যা ও ৫ পুত্র সন্তানের জনক। ২০০৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম মোছা. খোদেজা বেগম। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!