বীর প্রতীক মোক্তার আলী
মোক্তার আলী, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৫ ) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩৫ সালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোষেরচরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আজহার উদ্দিন শেখ এবং মাতার নাম বড়ু বিবি। তিনি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।
মোক্তার আলী ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল)-এ যোগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ইপিআর-এর সৈনিক হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় নিয়োগ লাভ করেন। ঢাকার পিলখানায়
প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের পর যশোর ৪ নম্বর সেক্টরের অধীনে কোটচাদপুরে বদলি হন। মোক্তার আলী ইপিআর-এর নায়েব সুবেদার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। ২৫শে মার্চ যাদবপুর বিওপিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। এখানকার পাঞ্জাবি ক্যাপ্টেন সাদেকসহ অনেক অবাঙালি সৈনিককে তিনি হতাহত করেন। বিভিন্ন প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন।
মোক্তার আলী যশোরের ঝিকরগাছা, ছুতিপুর, মাসল, কাশিপ, হিজলি, যাদবপুরসহ মোট ২৬টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অসীম সাহসিকতার জন্য তিনি বিপুলভাবে প্রশংসিত হন। নভেম্বর মাসে লে. অলিক কুমার গুপ্তের নেতৃত্বে তিনি টহলরত পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে ১৮-১৯ জন পাকসেনাকে হত্যা করেন। মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় বাংলাদেশ সরকার-এর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার মোক্তার আলীকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪৭৩, খেতাবের সনদ নম্বর ২২৩)।
মুক্তিযুদ্ধের পর মোক্তার আলী বিডিআর-এ যোগ দেন। বিডিআর-এর হাবিলদার হিসেবে ১৯৮২ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর নিজের গ্রামের বাড়িতে কৃষি জমি দেখাশোনা করেন। তিনি ৩ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মোছাম্মৎ হালিমন নেছা। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড