You dont have javascript enabled! Please enable it!

মোক্তারপাড়া বধ্যভূমি (নেত্রকোনা সদর)

মোক্তারপাড়া বধ্যভূমি (নেত্রকোনা সদর) নেত্রকোনা সদর উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়।
নেত্রকোনা জেলা শহরের দক্ষিণে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কের ওপর মোক্তারপাড়ার কাছে একটি ব্রিজ রয়েছে। এ ব্রিজে ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী অনেক মানুষকে হত্যা করে। ফলে এ স্থানটি মোক্তারপাড়া বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
ত্রিমোহনী বধ্যভূমিতে শহীদ ডা. মিহির সেনের পিতা হেমচন্দ্র সেন ও তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা অখিল সেন (আইনজীবী) স্বজনদের হারিয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে মনকান্দিয়া গ্রামে আত্মগোপন করেন। এক পর্যায়ে পাকিস্থানপন্থী দালালরা তাঁদের অবস্থানের খবর জেনে শহরে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু কিছুদিন পর রাজাকার সোনা মিয়া তাঁদের আটক করে তাঁদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। ৬ই আগস্ট রাত ২টার সময় নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া ব্রিজে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
স্থানীয় দালালদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নেত্রকোনা সদরের লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের বিরামপুর বাজারে হানা দেয়। সেদিন তারা বাজার থেকে বদিউজ্জামান মুক্তা, আবদুল মালেক শান্ত, আবু সিদ্দিক ও ইসমাইলকে ধরে নিয়ে আসে। তাঁদের ওপর অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। মুক্তারের গলায় জুতার মালা পরিয়ে শহরের নানা পথ প্রদক্ষিণ করায় রাজাকার আতাউর রহমান ননী ১৩ই নভেম্বর মোক্তারপাড়া ব্রিজে এঁদের গুলি করে হত্যা করা হয়। নেজামে ইসলামী-র কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মঞ্জুরুল হকের ছেলে ওবায়দুল হক তাহেরের নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এ অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। মোক্তারপাড়া বধ্যভূমি স্মরণে ‘স্মৃতিতে একাত্তর’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। [আলী আহাম্মদ খান আইয়োব]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!